রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে শুরু বিধানসভা বাজেট অধিবেশন

সোমবার বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের শুরু হয় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভাষণ দিয়েই। বিধানসভায় সেই ভাষণ পাঠের সময় শুরুতে বাংলাভাষাকেই বেছে নিলেন রাজ্যপাল। যদিও শেষ পর্যন্ত ভাষা বদল করে ইংরেজিতেই পরে রাজ্যপালের ভাষণের একটা বড় অংশ পাঠ করেন তিনি। রাজ্যপাল ভাষণ পাঠ করতে গিয়ে বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষা ব্যবহার করে সকলকে কার্যত চমকেই দিলেন তিনি। অন্যদিকে, রাজ্যপালকে তাঁর ভাষণে কেন্দ্রের বিরোধী বক্তব্য না-পাঠের জন্য ধন্যবাদ জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কেন্দ্র বিরোধী কিছু বক্তব্য এবং কিছু রাজনৈতিক বক্তব্য লিখে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যপাল বেঁকে বসায় রাজ্য সরকার সেই বক্তব্য পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছে। সেই জায়গা থেকে রাজ্যপালের ভাষণে বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তারা কোনওভাবে বাধা দেবেন না, হইচইও করবেন না।” এদিন দুপুর দু’টোয় বিধানসভায় আসেন রাজ্যপাল। তাঁকে পূর্ণ মর্যাদায় বিধানসভার গেট থেকে স্বাগত জানিয়ে নিয়ে আসেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুরু হয় রাজ্যপালের ভাষণ। প্রথম অবস্থায় সবটা শান্তিপূর্ণভাবে চললেও, রাজ্যপালের ভাষণ চলাকালীন একাধিক জায়গায় বিরোধীদল বিজেপির তরফ থেকে আপত্তি তোলা হয়। বিধানসভায় সরব হন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। অপর ক্ষেত্রে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অগ্নিমিত্রা পল প্রতিবাদ করেন নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে সরকার যা তুলে ধরেছেন সেটা বাস্তবচিত্র নয়। আর বিরোধী দলনেতা প্রতিবাদ করেন রাজ্যপালের ভাষণ আদতে ‘জল স্বপ্ন প্রকল্প’ নিয়ে। যদিও উভয় ক্ষেত্রেই রাজ্যপাল কয়েক মুহূর্তের জন্য বিরতি দেন তবে রাজ্যপালের বক্তৃতায় সেভাবে বাধার সৃষ্টি হয়নি। যথারীতি বিরোধিতা উপেক্ষা করেই নিজের ভাষণ শেষ করেন রাজ্য করেন রাজ্যপাল ৷ বাজেট বক্তৃতার প্রতিলিপি যেটি বিধায়কদের বিতরণ করা হয়, তাতে দুটি ক্ষেত্রে প্রথম স্পষ্টভাবে কেন্দ্র বিরোধী বক্তব্য ছিল। রাজ্যপালের ভাষণে 21 নম্বর পয়েন্টে কেন্দ্রের অসহযোগিতার প্রসঙ্গ থাকলেও রাজ্যপাল তা এড়িয়ে যাননি। এদিন ভাষণ শেষে বিজেপি এবং তৃণমূলও উভয়পক্ষকেই স্লোগান দিতে দেখা যায়। বিজেপি বিধায়কদের গলায় শোনা যায় ‘ভারত মাতার জয়’। আর তৃণমূল বিধায়করা তাঁর পাল্টা জবাব হিসাবে ‘জয় বাংলা স্লোগান’ দেন। এদিন রাজ্যপালের ভাষণের সঙ্গে ভাষণ শেষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ওটা রাজ্য সরকারের ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্প নয়, কেন্দ্রের ‘জল জীবন মিশন’! রাজ্য নাম বদলে দিয়েছে। রাজ্য নিজের মনগড়া অনেক কথা রাজ্যপালের বাজেট বক্তৃতায় লিখে দিয়েছিল। রাজ্যপাল সেগুলি বাদ দিয়েছেন। স্বাধীনতার পর এই প্রথম রাজ্যপাল সরকারের বক্তব্যের বিরোধিতা করলেন।” যদিও শাসক দলের তরফ থেকে এদিন শাসকদলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ বলেন, “রাজ্যপাল তাঁকে লিখে দেওয়া পুরো বক্তব্যই পাঠ করেছেন। আসলে এসব বলে মিডিয়ার নজরে থাকতে চাইছে বিজেপি।”

error: Content is protected !!