
মধ্যমগ্রাম হত্যা-কাণ্ডে মা ও মেয়ের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ
মধ্যমগ্রাম হত্যা-কাণ্ডে আরতি ও ফাল্গুনীকে হেফাজতে চাইল না পুলিশ। এ নিয়ে বারাসত জেলা আদালতে পুলিশের তরফে কোনও আবেদন করা হয়নি ৷ সরকারি আইনজীবীও ধৃত দু’জনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে এদিন কোনও সওয়াল করেননি। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারক মা ও মেয়েকে 14 দিনের জেল হেফাজতে পাঠান। পুলিশের এই ভূমিকায় স্বভাবতই বিতর্ক দানা বেঁধেছে ৷ ট্রলি ব্যাগে হত্যা-কাণ্ডে যেখানে এখনও বহু রহস্যের উদঘাটন বাকি ৷ সেখানে তদন্তের শুরুতেই নিজেদের হেফাজতে না চাওয়ার কী যৌক্তিকতা রয়েছে পুলিশের ? সেই প্রশ্নও উঠছে ৷ সরকারি আইনজীবীর দাবি, তদন্ত সবে শুরু হয়েছে । প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে । পরবর্তীতে তদন্ত এগোলে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হবে। এদিন সওয়াল জবাবের মাঝেই অন্যতম অভিযুক্ত আরতি ঘোষ এজলাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বারাসত এসিজেএম এজলাসে এদিন বিচার প্রক্রিয়ার শুরুতেই ফাল্গুনী এবং আরতির আইনজীবী সুশোভন মিত্র ও গৌরী শংকর বল জানান, যে ট্রলি ব্যাগ থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেটি তাঁর মক্কেলের নয়। ট্রলির চাবিও ছিল না তাঁর মক্কেলের কাছে। শ্বশুর বাড়ির সঙ্গে অশান্তি ছিল ফাল্গুনীর। সেই কারণেই শ্বশুরবাড়ির চক্রান্তের শিকার হয়েছেন তাঁর মক্কেলরা। আরতি ও ফাল্গুনী, দু’জনেই সম্পূর্ণ নির্দোষ। এরপরই পুলিশের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর বয়ান দেন আরতি ও ফাল্গুনীর আইনজীবীরা। তাঁরা বিচারকের উদ্দেশ্যে জানান, হেফাজতে থাকাকালীন আরতিকে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে তাঁর মক্কেলকে মেডিকেল সাপোর্ট দেওয়াও আবেদন করেন আইনজীবী। যদিও সরকারি আইনজীবী এই বয়ানের বিরোধিতা করেন। এদিন ধৃত দু’জনেরই জামিন চেয়ে সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবীরা। এক্ষেত্রেও সরকারি আইনজীবী সেই আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন। এরপর, ধৃত মা ও মেয়ের জামিন না-মঞ্জুর করে বিচারক 14 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত মা ও মেয়ের হয়ে এদিন আদালতে সওয়াল করতে অন্তত সাতজন আইনজীবী হাজির ছিলেন। যা এই ধরণের ঘটনার ক্ষেত্রে কার্যত বিরল বলেই মনে করছে আইনজীবীদের একাংশ। এদিকে, একদিনের জেল হেফাজত শেষে এদিন সকালেই আলিপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে আরতি ও ফাল্গুনীকে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে আসা হয় বারাসত আদালতে। কিন্তু, মধ্যমগ্রাম থানা থেকে মামলার কাগজপত্র না আসায় দিনভর কোর্ট লক-আপেই আটকে থাকতে হয় মা ও মেয়েকে। বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর মধ্যমগ্রাম থানা থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে এসে জমা দেওয়া হয় এসিজেএম-এর এজলাসে। তার পরেই শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া ৷ অন্যদিকে, আরতিকে ইনজেকশন দেওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর আইনজীবী গৌরী শংকর বল বলেন, “এটা তদন্তের বিষয়। এ নিয়ে এখনই কিছু বলার নেই।এটুকু বলছি, আমার দুই মক্কেল সম্পূর্ণ নির্দোষ। তদন্ত এগোলে সবটাই বেরিয়ে আসবে।” অপরদিকে, সরকারি আইনজীবী মেহতাব আলম বলেন, “কলকাতার উত্তর বন্দর থানায় যে এফআইআর হয়েছিল, তার ভিত্তিতেই মধ্যমগ্রাম থানা মামলা শুরু করেছে । অভিযুক্তদের আইনজীবী মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে ধৃতদের জামিনের আবেদন করেছিল । কিন্তু, বিচারক তা না-মঞ্জুর করেছেন।”