২মে বঙ্গজয়ের বর্ষপূর্তিতে মা-মাটি-মানুষ দিবসের ঘোষণা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো

 আজ ২ মে। ঠিক এক বছর আগে এই দিনেই সামনে এসেছিল একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল। যে ফলাফলের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ, যে ফলাফল চমকে দিয়েছিল দেশবাসীকে। যে নির্বাচনে ‘আবকে বার ২০০ পার’ হাঁক দিয়ে বাংলা দখলের জন্য ধেয়ে আসা বিজেপিকে ঠেকিয়ে, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে গোহারান হারিয়ে, বাংলা থেকে গিয়েছিল তার নিজের মেয়ের হাতেই। সেই একুশের ঐতিহাসিক নির্বাচনের ফলাফলের দিন ঘোষণার আজ বর্ষপূর্তি। সেই নির্বাচন দেখিয়েছিল কেন্দ্রের সর্বশক্তি নিয়ে বাংলার বুকে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করা প্রধানমন্ত্রী আর তাঁর তাঁবেদার দলকেও গোহারান হারানো যায়। সেই বর্ষপূর্তির দিনেই বাংলার মানুষকে টুইট করে অভিনন্দন জানালেন বাংলার অগ্নিকন্যা, বাংলার মেয়ে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন মোট ৬টি টুইট করেছেন। ৩টি বাংলায় ও ৩টি ইংরেজিতে। বক্তব্য অবশ্য একই। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘গতবছর এই দিনে দেশের কর্তাব্যক্তিদের আস্ফালনের বিরুদ্ধে বাংলার মা- মাটি- মানুষ তাঁদের অদম্য সাহসের পরিচয় রেখেছিলেন। সেজন্য আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। মা- মাটি-মানুষ সেদিন সারা পৃথিবীকে দেখিয়েছিলেন যে, গণতন্ত্রে মানুষের শক্তির চেয়ে বড় কোন শক্তি নেই। প্রকৃত জাতি-নির্মাণে আমাদের প্রয়াস জারি রাখতে হবে, কারণ অনেক যুদ্ধ লড়তে ও জিততে হবে। আজকের দিনটি আমি মা-মাটি-মানুষের কাছে উৎসর্গ করলাম এবং সকলের কাছে আমার আহ্বান, আজ থেকে এই দিনটি ‘মা-মাটি-মানুষ দিবস’ বলে অভিহিত হোক। জয় হিন্দ, জয় বাংলা।’ অন্যদিকে টুইট করে অভিষেক লিখেছেন, ‘২০২১-এর ২ মে সবসময় আমাদের হৃদয়ে থাকবে। এই দিনে তৃতীয় বারের জন্য মা-মাটি-মানুষের সরকারের প্রতি আস্থা রাখার জন্য বাংলার প্রতিটি মানুষকে ধন্যবাদ। সবসময় আপনাদের যথাসাধ্য সেবা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেই নাগরিক পরিষেবায় জোর দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একে একে কন্যাশ্রী, সবুজশ্রী, শিক্ষাশ্রী, সবুজসাথী, খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথীর মতো জনকল্যাণমূলক প্রকল্প তাই দুর্দান্ত সাফল্য লাভ করেছে। এ সবই কিন্তু নেত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত। আর এসব প্রকল্পের সহায়তা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের জনজীবনের মানোন্নয়ন ঘটেছে। ‘দিদিকে বলো’ প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি আমজনতার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা শুনেছেন তাঁর প্রতিনিধিরা। আর একুশের আগে মমতা বাড়ির মহিলাদের ভাঁড়ারে সঞ্চয়ের জন্য ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ভোটে জিতেই সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন। এখন বাড়ির মহিলারা মাসে ৫০০ টাকা করে পান ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পে। সে অর্থে তৃতীয় মমতা সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্পই এটা।তাই তৃতীয় তৃণমূল সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির উদযাপনেও সেই জনতার কথাই মাথায় রেখেছেন সুপ্রিমো। কর্মসূচি অনুযায়ী, বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ নবান্নে জেলাশাসকদের বৈঠক। সেখানে আলোচনা হবে ৫ থেকে ২০ মে পর্যন্ত কীভাবে জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির প্রচার চলবে রাজ্যজুড়ে। প্রসঙ্গত, ৫ মে কলকাতায় তৃণমূলের নতুন অফিস থেকে  ‘দিদিকে বলো-২’এর উদ্বোধন করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের শুরু হবে সরাসরি জনসংযোগের কাজ।  ২০২২-এর ২ মে এভাবেই নানা ব্যস্ততার মধ্যে কাটাবেন রাজ্যের সর্বময় অভিভাবক। আসলে প্রতিটি ২ মে-ই যে কাজেরই দিন।