ফের পুলিৎজার জয়ী আফগানিস্তানে নিহত চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি
২০২২ সালে পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ীদের তালিকায় ফের একবার নিজের নাম করে নিলেন ভারতীয় চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি। গত বছর জুলাইতে আফগানিস্তানের কান্দাহারে স্পিন বোলডাক অঞ্চলে আফগান ও তালিবান গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে ৷ সেই সময় ওই ঘটনাস্থলে ছিলেন সাংবাদিক-চিত্রকার ৷ দুই গোষ্ঠীর গোলাগুলির মাঝে প্রাণ হারান ৩৮ বছরের দানিশ ৷ কিন্তু তাঁর লেন্সবন্দি ছবিতে আজও তিনি মানুষের হৃদয়ে রয়েছেন। তিনি ছাড়াও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স-এর আরও তিন সাংবাদিক আদানান আবিদি, সান্না ইরশাদ মাত্তু, অমিত দাভে এই পুরস্কার পেয়েছেন ৷ এঁরা সিদ্দিকির সহকর্মী ৷ পুলিৎজার পুরস্কারের ওয়েবসাইট সোমবার এই পুরস্কারের নাম ঘোষণা করে ৷ ব্রেকিং ফোটোগ্রাফি বিভাগে তাঁদের তোলা ছবিগুলি মনোনীত হয়েছিল। সেখানে থেকেই বিচারকরা তাঁদের ছবিগুলিতে সেরা বলে চিহ্নিত করেন। বিচারকদের কথায় ভারসাম্যপূর্ণ, অন্তরঙ্গতা ও ধ্বংসাত্মকতা– এই তিনটি কারণে তাঁদের ছবিগুলি দর্শকদের মতে একটি বিশেষ অনুভূতি তৈরি করেছিল। দাবি পুলিৎজার কমিটির। হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান সাংবাদিক জোসেফ পুলিৎজার এই পুরস্কারের সূচনা করেন ৷ তাঁর নিজের একটি সংবাদপত্র ছিল ৷ ১৯১১-য় তাঁর মৃত্যুর সময় জোসেফ তাঁর সব অর্থ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে যান ৷ এর একটি অংশ দিয়ে ১৯১২ সালে সাংবাদিকতার একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয় ৷ বাকি অর্থ দিয়ে ১৯১৭ সাল থেকে পুলিৎজার পুরস্কার দেওয়া শুরু হয় ৷ ১৯ সদস্যের পুলিৎজার পুরস্কার বোর্ডে আমেরিকার তাবড় সাংবাদিক এবং সংবাদমাধ্যমের অন্য বিশিষ্টজনেরা রয়েছেন ৷ এর মধ্যে ৫ জন সংস্কৃতি জগৎ অথবা অ্যাকাডেমিক্সের ৷ গত বছর জুলাইতে কান্দাহারে স্পিন বলডাক জেলায় সেই অশান্ত পরিস্থিতির ছবি তুলতে গিয়েছিলেন দানিশ সিদ্দিকি৷ কিন্তু মুহুর্তকে বন্দী করার আগেই জীবনের গুলি করে তালিবানরা তাঁকে খুন করে বলে জানা গিয়েছে। ৩৮-এর যুবকের বাড়ি মুম্বইয়ে। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকের পাঠ শেষে মাস কমিউনিকেশনের একটি কোর্স করেন। টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন দানিশ সিদ্দিকি। যদিও পরবর্তীতে চিত্র সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে শিক্ষানবীশ চিত্র সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। কর্মদক্ষতা দিয়ে অনায়াসেই সংস্থার প্রধান চিত্র সাংবাদিকের পদ পান দানিশ। ইরাকের মসুলের যুদ্ধ, ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্পের ছবি, ২০১৯-২০ এ হংকং প্রোটেস্ট, ২০২০ সালে দিল্লির দাঙ্গায় দানিশ সিদ্দিকির তোলা সেই সব ছবি বিশ্ববাসীর চোখে বন্দিত হয়েছিল। ২০১৮ সালে সহকর্মী আদনান আবিদির সঙ্গে ফিচার ফোটোগ্রাফিতে পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন দানিশ। এটা তাঁর দ্বিতীয়বার পুলিৎজার প্রাপ্তি ৷