
খুন নয়, আত্মহত্যা করেছেন টেলি অভিনেত্রী পল্লবী দে, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ইঙ্গিত
বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী, বছর ২৫-এর পল্লবী দে-র রহস্যমৃত্যুর ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। তাঁর আচমকা মৃত্যুর খবরে হতবাক সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব থেকে অনুরাগীরা। রবিবার পল্লবীর মৃত্যু ঘিরে তাঁর পরিবার দাবি করেছিলেন, অভিনেত্রী আত্মহত্যা করেননি। তাঁকে খুন করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন পল্লবীর প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। পল্লবীর সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে থাকাকালীন কয়েক দিন আগেই অন্য কাউকে সাগ্নিক বিয়ে করেছেন বলেও দাবি জানান অভিনেত্রীর পরিবার। কিন্তু পল্লবীর মৃতদেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, তিনি আত্মহত্যাই করেছেন। তাঁর দেহে আঘাতের কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। রবিবার সকালে গড়ফার ফ্ল্যাটে পল্লবীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘরের দরজা ভেঙে পল্লবীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পুলিশকে খবর দেন তাঁর প্রেমিক সাগ্নিক। কাঁটাপুকুর পুলিশ মর্গে হয় পল্লবীর দেহের ময়নাতদন্ত শুরু। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, অভিনেত্রী আত্মহত্যা করেছেন। যদিও তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এবং পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ তদন্তকারীরা। পল্লবীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর পর থেকেই সাগ্নিককে জেরা করতে শুরু করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই তাঁর ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সাগ্নিক স্বীকার করেছেন, শনিবার এবং রবিবার সকালেও তাঁদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। এরপরই সকালে সিগারেট খেতে বাইরে বেরিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসেই পল্লবীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পল্লবী দে-র রহস্যমৃত্যুতে বাড়ছে ধোঁয়াশা। পল্লবীর পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, অভিনেত্রী আত্মহত্যা করেননি। হয়তো তাঁকে খুন করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে যাবতীয় অভিযোগ তুলেছেন সাগ্নিকের বিরুদ্ধে। এর মধ্যেই চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেছে পল্লবীর পরিবার। তাঁদের কথায়, দিন কয়েক আগেই আচমকা সাগ্নিক অন্য একজনকে বিয়ে করেন।শুরুতে অভিনেত্রী তা জানতে পারেননি। কিন্তু পল্লবীর সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে থাকা সত্ত্বেও অন্য কাউকে সাগ্নিক বিয়ে করেছেন, তা জানার পর মেনে নিতে পারেননি তিনি। এই নিয়ে তুমুল ঝামেলা শুরু হয় দুজনের মধ্যে। এমনকী সাগ্নিকের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও উঠেছে। সাগ্নিকের মা পল্লবীকে মন থেকে পছন্দ করতেন না বলেও জানিয়েছে অভিনেত্রীর পরিবার। পরিবারের চাপেই সাগ্নিক অন্য কাউকে বিয়ে করেছিলেন বলেই দাবি পল্লবীর পরিবার তরফে। যদিও পল্লবীর মা-বাবার অভিযোগ এবং বিয়ের কথা অস্বীকার করেছেন সাগ্নিক। অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল এবং সহ-অভিনেতাদের তরফে ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগেই হাওড়া থেকে গড়ফাতে একটি ফ্ল্যাটে প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তীর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল তাঁদের। ফ্ল্যাটে নিজেদের স্বামী-স্ত্রী বলেই পরিচয় দিয়েছিলেন দু’জনে। কিন্তু এই সম্পর্কের কারণে যে পল্লবী ভাল ছিলেন না, তা একাধিকবার সহকর্মী এবং বন্ধুদের জানিয়েছিলেন তিনি। আজ সাগ্নিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবে পল্লবীর পরিবার। তার পরে পুলিশ কেস রেজিস্টার করার পরে তদন্ত শুরু করবে। এমনই জানা যাচ্ছে পুলিশ সূত্রে।