
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জন্মদিনে নবান্নে শ্রদ্ধা জানালেন মন্ত্রী অরুপ রায়
আজ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জন্মদিন। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে নবান্নে মাল্যদান করলেন মন্ত্রী অরুপ রায়। বাংলায় দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে অন্যতম হল দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান। তাঁর গানের মধ্যে ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা’ সবচেয়ে জনপ্রিয়। তিনি ডিএল রায় নামে বেশি পরিচিত। পাঁচ শতাধিক গান লিখেছেন তিনি- যা দ্বিজেন্দ্রগীতি নামে পরিচিত। দ্বিজেন্দ্রলাল পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে ১৮৬৩ সালের ১৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা কার্তিকেয়চন্দ্র রায় ছিলেন কৃষ্ণনগর রাজবংশের দেওয়ান এবং বিশিষ্ট খেয়াল গায়ক ও সাহিত্যিক। তার বাড়িতে বহু গুণীজনের সমাবেশ হতো। এমন পরিবেশে বেড়ে উঠেন বালক দ্বিজেন্দ্রলাল। এ কবি, নাট্যকার ও সঙ্গীতজ্ঞ ১৯১৩ সালের ১৭ মে কলকাতায় মারা যান। ১৮৭৮ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১০ টাকা বৃত্তি লাভ করেন দ্বিজেন্দ্রলাল। এফএ পাস করেন কৃষ্ণনগর কলেজ থেকে। হুগলি কলেজ থেকে বিএ ও ১৮৮৪ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এমএ পাস করেন। কিছুদিন ছাপরার রেভেলগঞ্জ মুখার্জ্জি সেমিনারিতে শিক্ষকতা করেন। এরপর কৃষিবিদ্যা পড়তে সরকারি বৃত্তি নিয়ে ইংল্যান্ড যান। রয়্যাল এগ্রিকালচারাল কলেজ ও এগ্রিকালচারাল সোসাইটি হতে কৃষিবিদ্যায় এফআরএএস এবং এমআরএসি ও এমআরএস ডিগ্রি লাভ করেন। ইংল্যান্ডে থাকাকালে ১৮৮৬ সালে প্রকাশিত হয় একমাত্র ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ লিরিকস অব ইন্ডিয়া। ওই বছরই দেশে ফিরে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ৩ বছর বিদেশে থাকার জন্য তাকে প্রায়শ্চিত্ত করতে বলা হয়। এতে অসম্মতি জানালে অনেক ধরনের সামাজিক উৎপীড়ন সহ্য করতে হয়। ভারতে ফিরে জরিপ ও কর মূল্যায়নে প্রশিক্ষণ নিয়ে মধ্যপ্রদেশে সরকারি দফতরে যোগ দেন দ্বিজেন্দ্রলাল। পরে দিনাজপুরে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ পান। ১৮৯০ সালে বর্ধমান এস্টেটের সুজামুতা পরগনায় সেটেলমেন্ট অফিসার হিসেবে কাজ করাকালে কৃষকদের অধিকার নিয়ে বাংলার ইংরেজ গভর্নরের সঙ্গে বিবাদ ঘটে। অসুস্থতার কারণে ১৯১৩ সালে অবসর নেন। কৈশোরেই দ্বিজেন্দ্রলাল কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৯০৫ সালে তিনি কলকাতায় পূর্নিমা সম্মেলন নামে একটি সাহিত্য সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৩ সালে ভারতবর্ষ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে একসময় তার সখ্যতা থাকলেও পর সাহিত্য নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। তার সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো দেশপ্রেম ও ইতিহাস চেতনা। ১৯১৩ সালের ১৭ মে তার জীবনাবসান ঘটে।