উত্তম কুমারের ৪২ তম প্রয়াণ দিবসে মুখ্যমন্ত্রীর শ্রদ্ধাঞ্জলী

আজও বিশ্ব বাঙালির মননে মননে রয়েছেন বাঙলীর সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নায়ক উত্তম কুমার। গুটিকয় কয়েকজন অতি প্রতিভা সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের মধ্যে অন্যতম একজন উত্তম কুমার। যিনি বিরল প্রতিভার গুণে শুধু একাল নয়, আগামী কয়েক প্রজন্ম মানুষের কাছে মনে থাকতে বাধ্য। তিনি যেন আমাদের প্রত্যেকের মনে চিরকালের জন্যে অবস্থান বানিয়ে নিয়েছেন। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর কোনও বিকল্প নেই, আর আসবেও না কোনোদিন। আজ ২৪ জুলাই। আজকের দিনেই আমাদের সকলকে ছেড়ে চিরতরে বিদায় নিয়েছিলেন উত্তম কুমার। ১৯৮০ সালে ঠিক আজকের দিনেই সকল বাঙালিকে কাঁদিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন মহানায়ক। তাই আজ স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যেকে বাঙালির মন খারাপ, মন খারাপ তাঁদেরও যারা উত্তম কুমারের মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে জন্মেছেন। এহেন মহান নায়ককে দেখার সুযোগ তাঁদের নাহলেও সবাই আজ শোকহত। উত্তম শ্রদ্ধাঞ্জলীতে গোটা শহর ভরে উঠেছে। বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে ব্যস্ত সবাই। মহানায়ককে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি টুইট করে মহানায়ককে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানিয়ে লিখেছেন, “কিংবদন্তি মহানায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমার আন্তরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি। তিনি ছিলেন আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রিয় ম্যাটিনি আইডলের মধ্যে একজন হয়ে। এই আইকন আজও আমাদের হৃদয়ে বাস করছে।” তবে ৪২ তম মৃত্যুবার্ষিকীতেও মহানায়ককে ঘিরে এত আকর্ষণের কারণ তাঁর প্রতিভার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে আকুল শ্রম আর অভূতপূর্ব সংকল্প। এই কারণেই আজ বাঙালিদের মনে তাঁর জায়গা অটুট রয়েছে। তবে তাঁর এই খ্যাতি প্রথম থেকে ছিলনা, প্রথম প্রথম তাঁর নামের পাশে ‘ফ্লপ মাস্টার’ তকমাও এঁটেছিল। কারণ কেরিয়ারের পরপর ৭ টি ছবি ফ্লপ হওয়ায় ইন্ডাস্ট্রির তরফ থেকেই এই ট্যাগ উপহার পেয়েছিলেন নায়ক। কিন্তু হাল ছেড়ে নয়, ক্রমে এই ব্যর্থতাকেই হাতিয়ার করে তিনি হয়ে ওঠেন নায়ক, তারপর মহানায়ক। তাঁর এহেন যাত্রা সুদীর্ঘ ছিল। বলা বাহুল্য, উত্তম কুমারের সময়ে ইউনিক অভিনয়ের প্রতিভা সবার কাছে থাকলেও তিনি ছিলেন সবার থেকে আলাদা। শোনা যায়, তিনি নাকি প্রথম প্রথম সংলাপ ঠিক করে বলতে পারতেন না, তোতলামি করতেন। কিন্তু পরে তা অতি কষ্টে শুধরে ছিলেন তিনি। চেহারার দিক দিয়েও তাঁর অতিব সৌন্দর্য না থাকলেও তিনি রীতিমতো অভিনয় দিয়ে প্রতিটি বাঙালিরর মনে দোলা লাগিয়েছিলেন। ১৯৬৫ সালের পর থেকে উত্তম যেন প্রতিটি বাঙালির ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছিলেন। ততদিনে তাঁর চেহারা, অনাবৃত হাসি, নজরকাড়া চাহনি সবটাই মানুষের মনে যাদুর সৃষ্টি করেছিল। তাঁর অসামান্য ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন, পরিপার্শব সবটা দিয়েই তিনি একজন নিটোল অভিব্যক্তি হিসেবে পরিচিত পেয়েছিলেন। শোনা যায়, তাঁর শেষ ছবি ছিল ‘ওগো বধূ সুন্দরী’, এই ছবি করতে করতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন নায়ক। এরপরেই মারা যান নায়ক। কিন্তু তিনি শুধু আজ নয়, যুগ যুগ ধরে আমাদের কাছে একইভাবে অমর হয়ে থাকবেন।

error: Content is protected !!