আগামীকাল থেকে শুরু অম্বুবাচী, আগামীকাল থেকে ৩ দিন বন্ধ কামাখ্যা মন্দির

হিন্দুধর্মের এক গুরুত্বপূর্ণ বাৎসরিক উৎসব হল অম্বুবাচী ।  এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শাস্ত্রের নানা কাহিনি। এই অম্বুবাচী বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অমাবতী বলেও পরিচিত। ভারতের একাধিক স্থানে এই উৎসব, রজঃউৎসব নামেও পালিত হয়। অম্বুবাচী শুরুর পর তিন দিন চলে এই উৎসব। চলতি বছরে অম্বুবাচী অম্বুবাচী শুরু হবে ২২ জুন, বৃহস্পতিবার (বাংলা ৬ আষাঢ়) ভোর রাত ২টো ৩২ মিনিটে। শেষ হবে ২৬ জুন, সোমবার (বাংলা ১০ আষাঢ়) দুপুর ২টো ৫৬ মিনিটে। হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্রে ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি শক্তিপীঠের নিজস্ব বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। অসমের গুয়াহাটি শহরে অবস্থিত কামাখ্যা দেবী মন্দিরটিও একান্ন শক্তিপীঠের মধ্যে অন্যতম। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, দেবী সতীর যোনি কামাখ্যা মন্দিরে পড়েছিল, আর তাই দেবীর কোনও মূর্তি নেই। বরং এই মন্দিরে রয়েছে একটি কুণ্ড, যেটি সর্বদা ফুল দিয়ে ঢাকা থাকে। অম্বুবাচীর সময়কালকে দেবী কামাখ্যার মাসিক শুরু হয়। সেই সময় কুণ্ডটি সাদা রঙের কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর যখন মন্দির বন্ধ থাকে তখন সাদা কাপড় দেওয়া থাকে। হিন্দু ধর্মমতে, মন্দির খুলে দেওয়ার পর এই কাপড় লাল হয়ে যায় বলে মনে করা হয়।

প্রতি বছর অম্বুবাচীর সময় কামাখ্যা মন্দিরে অম্বুবাচী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, অম্বুবাচীর মেলার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দুমতে, এই সময় দেবী কামাখ্যা রজঃস্বলা বা ঋতুস্রাবে অবস্থায় থাকেন। কথিত আছে, যখন দেবী এই দিন থেকে ঋতুস্রাব শুরু হয়, সেইদিন থেকে গর্ভগৃহের দরজা আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যায়। এই সময়ে কাউকে ভিতরে গিয়ে দর্শন করতে দেওয়া হয় না। রজঃস্বলা শেষে দেবীকে স্নান করিয়ে, সাজিয়ে তারপর মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়ার রীতি রয়েছে। কথিত আছে অম্বুবাচী মেলার চতুর্থ দিনে দেবী কামাখ্যা দর্শন করলে ভক্তরা সকল প্রকার পাপ থেকে মুক্তি লাভ করেন। দেওয়া হয় বিশেষ ধরনের প্রসাদও। অম্বুবাচীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু আচার অনুষ্ঠান। বিশ্বাস করা হয় যে, এগুলি মেনে চললে সংসারের মঙ্গল হয়।