
তালসারি থেকে উদ্ধার বিশ্বভারতীর অপহৃত বিদেশি ছাত্র, ধৃত ১২
তালসারি থেকে বিশ্বভারতীর অপহৃত বিদেশি ছাত্র পান্নাকারাকে উদ্ধার করল পুলিস। মোট ১২জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ছাত্র অবৈধ ব্যবসায় জড়িত ও কয়েক কোটি টাকার লেনদেনে যুক্ত রয়েছে বলে পুলিস প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে। সেই গণ্ডগোলের জেরে অপহরণ কিনা তা জানতে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান জেলার পুলিস সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। অপহৃত ছাত্রের বাড়ি মায়ানমারে। তিনি বিশ্বভারতীর ভাষা ভবনের ছাত্র। বর্তমানে সংস্কৃত নিয়ে গবেষণায় যুক্ত রয়েছেন। বোলপুর থানার ইন্দিরাপল্লিতে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। সেখানে তিনি তার বান্ধবীর সঙ্গে লিভ ইনে ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ১২-১৫ জন দুষ্কৃতী পান্নাকারাকে অপহরণ করে। তবে সেইসময় তাঁর বান্ধবী ছিলেন না। ছাত্রের বন্ধু কবিদার মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। পরে কবিদাই বিষয়টি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে জানান। বিদেশি ছাত্রের অপহরণের ঘটনা জানাজানি হতেই সর্বত্র শোরগোল পড়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো বোলপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস তৎপর হয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে। এছাড়া পান্নাকারার মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখা হয়। কল লিস্টে থাকা বিভিন্ন নম্বরের লোকেশনও ট্র্যাক করা হয়। এরপর পান্নাকারার খোঁজ মেলে। পূর্ব মেদিনীপুর পুলিসের সহায়তায় ওড়িশার তালসারি বিচ থেকে পান্নাকারাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বীরভূম পুলিস। ধৃতদের মধ্যে বীরভূমের দুবরাজপুরের তিনজন ও নানুরের একজন রয়েছে। বাকি আটজন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। তাদের কাছ থেকে খোয়া যাওয়া মোবাইল ও অপহরণে ব্যবহৃত দু’টি গাড়ি উদ্ধার করেছে পুলিস। এদিন দুবরাজপুরের তিন অভিযুক্ত আজহারউদ্দিন মির্ধা, শেখ আলাউদ্দিন ও আলাউল্লা শেখকে বোলপুর আদালতে তোলে পুলিস। বিচারক তাদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। বাকিদের আজ, রবিবার আদালতে তোলা হবে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিদেশি ছাত্র পূর্ব মেদিনীপুরের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে অবৈধ কারবারে জড়িয়ে পড়েছিলেন। প্রায় ছ’কোটি টাকার লেনদেনও হয়। ওই ছাত্র সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা দিলেও বাকি ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে গণ্ডগোল হয়। ওই ব্যবসায়ী বীরভূমের দুবরাজপুর ও নানুরের শাগরেদদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর ওই ছাত্রকে অপহরণ করে বলে পুলিস জানতে পেরেছে। শনিবার জেলার পুলিস সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ওই ছাত্র একটি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। যা বৈধ নয় বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। এর সঙ্গে কোনও আন্তর্জাতিক যোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।