রাজপুর-সোনারপুরে বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার মা-বাবা ও ছেলের পচাগলা দেহ

সকালে পচা গন্ধ ফ্ল্যাট থেকে আসছে দেখে ডাকাডাকি করেন। সাড়া না মেলায় পুলিশের খবর দেন স্থানীয়রাই। পুলিশ এসে ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙতেই উদ্ধার হয় বাবা-মা ও ছেলের ঝুলন্ত দেহ। হাড় হিম করা ঘটনা রাজপুর-সোনারপুর ১নং ওয়ার্ডের। মা-বাবা ও ছেলের দেহ উদ্ধার হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়া মোড় নেয় ঘটনা। সূত্রে খবর, মৃত্যু হয়েছে অপর্ণা মৈত্র তাঁর স্বামী স্বপন মৈত্র এবং তাঁদের ছেলে সুমনরাজ মৈত্রের। তাহলে কি বাবা-মাকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন সুমন। সুমনরাজ মৈত্রের ২৮ নভেম্বর করা ফেসবুক লাইভ পুলিশের হাত আসার পরেই দানা বাঁধছে জট। মৃত তিনজন হলেন অপর্ণা মৈত্র (৬৮), তাঁর স্বামী স্বপন মৈত্র (৭৫) এবং তাঁদের ছেলে সুমনরাজ মৈত্র (৩৯)। দরজা ভিতর থেকে আটকানো ছিল । সেকারণেই পুলিশের প্রাথমিকভাবে অনুমান করছে পরিবারের সকলে আত্মঘাতী হয়েছেন । মৃত্যুর আগে সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন সুমনরাজ মৈত্র । পুলিশের হাতে এসেছে ভিডিয়োটি ৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরে এই পরিবারের কাউকে বাইরে বেরতে দেখা যাচ্ছিল না । গতকাল থেকে ওই ফ্ল্যাটের ভিতর দিয়ে পচা গন্ধ বের হচ্ছিল । বারবার ডেকেও কারোর সাড়া মিলছিল না । এরপরেই আজকে খবর দেওয়া হয় পুলিশে । পুলিশ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে এসে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন ৷ সেসময় ঝুলন্ত অবস্থায় তিনজনের দেহ দেখতে পান তাঁরা । প্রতিবেশী স্বর্ণলতা পাত্র বলেন, ওই পরিবারে অশান্তি ছিল বলে তো কিছু জানতাম না । তবে পাড়ায় সকলের সঙ্গে খুব বেশি মেলামেশা করত না পরিবারটি । নিজেদের মতোই থাকত । কিন্তু কেন এমন কাণ্ড ঘটাল সেটা বলতে পারব না । গতকাল থেকেই ওই ফ্ল্যাটের আশেপাশে দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম আমরা । প্রথমে মনে হয় ইঁদুর মরার গন্ধ ৷ আজ সকালে গন্ধটা আরও তীব্র হয় ৷ সেই কারণেই পুলিশে খবর দেওয়া হয় । পুলিশ এসে দেহগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায় ৷ পুলিশ জানিয়েছে, ঘরের তিনটি আলাদা জায়গা থেকে মা-বাবা ও ছেলের দেহগুলি উদ্ধার করা হয়েছে । তবে কেন পরিবারের তিনজনেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, তা স্পষ্ট নয় । ঘরের মধ্যে থেকে কোনও সুইসাইড নোটও মেলেনি । ওই পরিবারের সঙ্গে কারও কোনও বিরোধ বা অশান্তি ছিল কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ । তদন্তকারী আধিকারিকরা মৃতদের ফোনগুলি বাজেয়াপ্ত করেছে ৷ সেগুলির কল লিস্ট ঘেঁটে দেখা হচ্ছে ৷ পাশাপাশি মৃতদের আত্মীয়দের খোঁজ করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে পুলিশ ।