কালীঘাটে বিশেষ বৈঠক তৃণমূলের

নজরে লোকসভা ভোট। তাই এখন থেকে দলের সাংগঠনিক দিক চাঙ্গা করতে বৈঠক শুরু করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷  প্রবীণ-নবীন বিতর্কের মাঝে কালীঘাটে দলীয় বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে নতুন দায়িত্বও দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবীণ-নবীন বিতর্ক রুখতে কড়া বার্তা দেন দলনেত্রী। বেশ কয়েকজন মুখপাত্রদের নিয়েও উষ্মাপ্রকাশ করেন। বেশ কয়েকজন মুখপাত্র বদলের নির্দেশও দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, দলের বেশ কয়েকজন মুখপাত্রের ভূমিকায় খুশি নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন মুখও আনা হতে পারে! বলে রাখা ভালো, এই মুহূর্তে তৃণমূলে মোট ২১ জন মুখপাত্র রয়েছেন। তবে কোন কোন মুখপাত্র বদল হবে সে বিষয়ে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি। কাদের বদল করা হবে, কাকেই বা নতুন মুখপাত্র করা হবে, সে বিষয়ে অবশ্য সিদ্ধান্ত নেবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সি। তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশ, সমস্ত ইস্যুতে নিয়েই বুকলেট তৈরি করতে হবে। সেই বুকলেট পৌঁছে দেওয়া হবে দলের কর্মীদের কাছে। বুকলেট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অভিষেককে। সঙ্গে কড়া বার্তা, ‘কেউ কারও বিরুদ্ধে কথা বললেই কড়া ব্যবস্থা’। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট নির্দেশ, নিজেদের মধ্যে সবকিছু ভুলে একযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে৷ দলে কোনও বিষয়ে কারও ভিন্ন মত থাকতে পারে৷ কিন্তু কোনও অবস্থাতে তা নিয়ে বাইরে মুখ খোলা চলবে না৷ দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে সবাইকে৷ বৈঠক শেষে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বর্ষীয়ান নেতা মানস ভুঁইয়া বলেন, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, বাংলার বঞ্চনার বিরুদ্ধে, বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিরুদ্ধে, বাংলার অর্থনীতিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদে প্রতিটি জেলায়, প্রতিটি ব্লকে, অঞ্চলে, হাটে-বাজারে আন্দোলন কর্মসূচি গড়ে তুলতে হবে৷ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না৷ লড়াই হবে তীব্র থেকে তীব্রতর৷ মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে কীভাবে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ১০০ দিনের কাজের টাকা ও আবাস যোজনার টাকা বিজেপি সরকার আটকে রেখেছে৷ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁর নবজোয়ার কর্মসূচির অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নেন৷ নেত্রীও বিজেপির এক একটি জনবিরোধী বিষয়কে তুলে ধরে বুঝিয়ে দেন মিটিংয়ে-মিছিলে কীভাবে এগুলিকে মানুষের সামনে আনতে হবে৷ তাই দলকে এখন থেকেই রাস্তায় নামার পরামর্শ দিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের বৈঠকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সর্বস্তরের নেতা-নেত্রী ও সাংগঠনিক পদাধিকারীদের নেত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ, নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রেখেই এককাট্টা হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ে নামতে হবে। অজিত মাইতি, সাংসদ দেব, বিধায়ক জুন মালিয়া, মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া-সহ জেলার সব বিধায়ক ও সংগঠনের নেতৃত্বকে একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলির সুবিধা মানুষ ঠিকঠাক পাচ্ছেন কি না সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন। বিশেষ করে আদিবাসী ও জনজাতি গোষ্ঠী এলাকায় আরও বেশি করে জনসংযোগ করতে বলা হয়েছে।