‘হেরিটেজ ট্যাক্সি’ চালানোর অনুমোদনে ক্ষুব্ধ সংগঠন, টানা ধর্নায় বসার চরম হুশিয়ারি

টানা ধর্নায় বসার চরম হুশিয়ারি দিল হলুদ ট্যাক্সির মালিক-চালকদের একাংশ। হলুদ ট্যাক্সি নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগের কোনও সুরাহা হয়নি ৷ তার উপর একটি বেসরকারি অ্যাপ ক্যাব সংস্থাকে ‘হেরিটেজ ট্যাক্সি’ চালানোর অনুমোদন দেওয়ার আগে ট্যাক্সি সংগঠনগুলির সঙ্গে কোনও আনোচনাই করা হয়নি ৷ সব মিলিয়ে তাই টানা ধর্নায় বসার শিয়ারি দিয়েছে হলুদ ট্যাক্সির মালিক ও চালকদের একটা অংশ ৷ এআইটিইউসি অনুমোদিত ওয়েস্ট বেঙ্গল ট‌্যাক্সি অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি তাদের সমস্ত দাবিদাওয়া নিয়ে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে ৷ সম্প্রতি এনএ মোবিলিটি প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি বেসরকারি অ্যাপ ক্যাব সংস্থা চালু করেছে হেরিটেজ ট্যাক্সি। এই বেসরকারি অ্যাপ ক্যাব সংস্থার উদ্যোগেই কলকাতা জনপ্রিয় অ্যাম্বাসেডর হলুদ ট্যাক্সি রূপ বদলে মারুতি সংস্থার ওয়্যাগন-আর মডেলের গাড়িটিকে হলুদ রং দিয়ে পথে নামানো হচ্ছে। তাই নাম দেওয়া হয়েছে হেরিটেজ ক্যাব। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে অখুশি সংগঠন। ওয়েস্ট বেঙ্গল ট‌্যাক্সি অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির মতে, ঐতিহ্যের হলুদ ট্যাক্সিকে বেসরকারি সংস্থার হাতে দেওয়া আগে ট্যাক্সি সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন ছিল। এই বিষয় সংগঠনের কনভেনার নাওয়াল কিশোর শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন যে, সরকারের এই ধরনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত হতাশা ব্যঞ্জক। ঐতিহ্যের হলুদ ট্যাক্সিকে বাঁচানোর ব্যাপারে রাজ্য পরিবহণ দফত নীরব ও নির্বিকার। তাই এনে মবিলিটির সঙ্গে রাজ্য সরকারের যে চুক্তি হয়েছে, তাতে একেবারেই খুশি নয় সংগঠন। একদিকে বলা হচ্ছে যে 15 বছরের পুরোনো যে সব হলুদ ট্যাক্সি বাতিল হয়ে যাচ্ছে, সেই সব ট্যাক্সির চালকরা যাতে আবার এই নতুন হলুদ ট্যাক্সি চালাতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করবে এই বেসরকারি সংস্থা। তাই ট্যাক্সি বাতিল হয়ে গেলেও পুরোনো ট্যাক্সি চালকরা কর্মহীন হয়ে পড়বেন না। কিন্তু, এই বিষয় সংগঠন মনে করছে যে, এ হেন সিদ্ধান্ত যে নেওয়া হয়েছে, সেটা রাজ্যের ট্যাক্সি সংগঠনগুলি কিংবা চালকরা কীভাবে জানবেন? তাই এই সিদ্ধান্ত হয়ে থাকলেও অধিকাংশ চালক এখনও অন্ধকারে। এই বিষয় সরকারকে স্পষ্ট নির্দেশিকা বা বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। সম্প্রতি পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী এই ধরনের 20টি ট্যাক্সি উদ্বোধন করেন। এরপর ধাপে ধাপে আরও গাড়ি নামানো হবে পথে। এছাড়াও, সংগঠন দাবি করে যে, হলুদ ট্যাক্সর মেয়াদ 15 বছর থেকে বাড়িয়ে 20 বছর করা হোক। প্রসঙ্গত, এই বিষয় রাজ্য সরকারেরও যে একই অভিমত তা ইতিমধ্যেই আদালতেও জানানো হয়েছে। শুক্রবার সংগঠনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে, একাধিকবার ট্যাক্সি সংগঠন মালিক ও চালকদের সমস্যার কথা তুলে ধরে পরিবহণমন্ত্রী থেকে শুরু করে পরিবহণ সচিব এবং মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন ৷ কিন্তু, কোনও কাজই হয়নি তাতে। তাই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে এপ্রিলের প্রথমেই পরিবহণ দফতের সামনে ধর্নায় বসবে হলুদ ট্যাক্সির চালক ও মালিক পক্ষ।

error: Content is protected !!