
‘গুলি করলেও একতার পথ থেকে সরব না’, মহাবীর জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে সম্প্রীতির বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
“গুলি করে মারলেও একতার পথ থেকে সরব না।” বুধবার মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষ্যে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের একটি অনুষ্ঠানে সম্প্রীতির বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখানে তাঁর বার্তা, একতায় দেশের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। বিভাজনে দেশে দুর্বল হয়ে পড়বে জানিয়ে সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এও বলেন, আজকের দিনে আমাদের একতার পক্ষে লড়তে হবে, একতার জন্য হাঁটতে হবে । জিয়ো অর জিনে দো – এই ভাবনাতেই রয়েছে বাংলার অহঙ্কার, আমাদের সম্প্রীতির পরিচয় ।” বাংলাদেশ সীমান্তের অশান্তির প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “সীমান্তে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, তা মনে করিয়ে দেয় একতা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব । যারা সকলকে ভালোবাসে, তাদের সকলেই ভালোবাসে ।” রাজনৈতিক বিরোধীরা প্রায়ই সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে । এদিন সেই প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি কোনও একটি ধর্মের নই, আমি সব ধর্মের । সব ধর্মের অনুষ্ঠানেই যাই, সব ধর্মের মানুষের জন্য কাজ করি ।” তিনি উদাহরণ দেন বিবেকানন্দের বাড়ি পুনরুদ্ধার, বেলুড় মঠে উন্নয়ন, কালীঘাট ও দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পরিকাঠামো উন্নয়নের । জানান, রেলমন্ত্রী থাকাকালেও তিনি সব ধর্মের তীর্থস্থানকে রেলের মাধ্যমে যুক্ত করার কাজ করেছেন । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “ভাগাভাগি করলে একসময় দেশ এতটাই বিভক্ত হয়ে যাবে যে অর্থনীতিও দুর্বল হয়ে পড়বে । আমাদের প্রয়োজন একসঙ্গে চলার । কেউ মানুন বা না মানুন, সকলকে নিয়ে চলাই আমার সরকারের নীতি । ভবিষ্যতেও এই নীতি মেনেই আমরা চলব ।” সম্প্রতি কিছু মহল থেকে দাবি উঠেছে, বাংলায় হিন্দুরা নাকি অবহেলিত । এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বলুন তো, কোনও হিন্দু উৎসবে আপনাদের আটকানো হয়েছে ? আমি তো দেখেছি, সংখ্যালঘুরাও হিন্দুদের উৎসবে খোলামনে অংশ নেন । ওরা যখন ঈদের সময় আমায় ডাকে, আমি যাই । তাহলে পুজোর সময় আমি গেলে প্রশ্ন ওঠে কেন ? আমি যাবই সব ধর্মের অনুষ্ঠানে । যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন যাব । আমাকে গুলি করলেও আমি যাব । আমি বিশ্বাস করি, ভালোবাসা, সম্প্রীতি আর একতার মধ্যেই দেশের ভবিষ্যৎ লুকিয়ে আছে ।” শেষে সব ধর্মের মানুষকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভরসা রাখুন । আমি আপনাদের বিরোধী নই, পাশে আছি । আমি আগেও থেকেছি, ভবিষ্যতেও থাকব । আপনারা সকলে একসঙ্গে এগিয়ে চলুন, দেশকে নেতৃত্ব দিন, একতার পক্ষে কাজ করুন ।”