
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কড়া ভাষায় বাংলার তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে কড়া ভাষায় বাংলার তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই প্রথম নয়। এর আগেও পশ্চিমবঙ্গের মাটি ব্যবহার করে অবাধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনতে শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। বৃহস্পতিবার একটি সর্বভারতীয় বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমের কনক্লেভে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত বলেন, ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হোক বা রোহিঙ্গা- আমাদের দেশে ওরা অনেকদিন ধরেই ঢুকছে। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময়ে ওরা অসম সীমান্ত দিয়ে ঢুকত। এখন ওরা বাংলার সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢুকছে, যেখানে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলার মানুষ যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে সরিয়ে বিজেপি সরকার আনতে পারেন, তা হলে অনুপ্রবেশ সমস্যা এবং (ভারত–বাংলাদেশ) সীমান্ত এলাকায় অপরাধ বন্ধ হবে।’ তাঁর আরও দাবি, ‘যত বাংলাদেশি (দিল্লিতে) ধরা পড়েছে, তাঁদের সকলের আধার কার্ড ছিল, আর সবক’টিই উত্তর ২৪ পরগনার। আপনারা (তৃণমূল সরকার) তাঁদের আধার কার্ড করিয়ে দিচ্ছেন, আর ওঁরা দিল্লিতে আসতে তার সদ্ব্যবহার করছেন।’ অমিতের এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় এ দিন বলেন, ‘অমিত শাহ ওঁর দলে নিজের অবস্থান ঠিক রাখতে এই অনুপ্রবেশের ন্যারেটিভ তৈরি করতে চাইছেন। উনি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে কোনও সাফল্য দিতে পারেননি। কাঁটাতারের বেড়া না–থাকা, জমি না দেওয়া––এ সব কথা বলে ওঁর দলকে উনি বোঝাতে চাইছেন, অনুপ্রবেশ হচ্ছে বলে বিজেপি ভোটে জিততে পারছে না। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই এই ন্যারেটিভ।’ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ এবং সেখানে কাঁটাতার লাগানো নিয়ে কেন্দ্র–রাজ্যের এই চাপানউতোর নতুন নয়৷ গত দশ বছরে মোদী সরকারের সময়কালে কেন্দ্রের তরফে বেশ কয়েকবার অভিযোগ করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অসহযোগিতার কারণেই ভারতীয় ভূখন্ডের বিভিন্ন জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া বসাতে গিয়ে প্রবল সমস্যায় পড়ছেন সরকারি কর্মীরা৷ এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে বারবারই সোচ্চার হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ বাংলাদেশ সীমান্তে পশ্চিমবঙ্গের ৪০০ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া বসানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে জমি দিচ্ছে না রাজ্য, দিল্লিতে এ দিন ফের অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সংবাদ মাধ্যমের কনক্লেভে অমিত বলেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্তে এমন ২৫০ কিমি জায়গা আছে, যেখানে কাঁটাতারের বেড়া লাগানো সম্ভব নয়৷ এই জায়গায় বেশ কয়েকটি খরস্রোতা নদী আছে, এখানকার ভৌগোলিক অবস্থানও খুব অনুকূল নয়। ফলে এখানে কাঁটাতারের বেড়া বসানো যাচ্ছে না৷ এর বাইরে বাংলায় ৪০০ কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া লাগানোর জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় জমি দিচ্ছে না রাজ্য সরকার।’