
মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এদিকে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার শনিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদে পৌঁছেছেন ৷ শনিবার মুর্শিদাবাদে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ তাঁর আবেদনকে মান্যতা দেয় আদালত ৷ এই নির্দেশের পর বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব কথা শোনেননি ৷ বিচার ব্যবস্থা তা শুনেছে ৷ আমি এই বিচার ব্যবস্থাকে প্রণাম করি ৷ মুখ্যমন্ত্রী ও ডিজি রাজীব কুমারের গালে সজোরে থাপ্পড় মারল ৷” বিচারপতি সৌমেনে সেন ও বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরীর স্পেশাল বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়ে জানায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কেন্দ্রীয় বাহিনী, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করবে ৷ এদিন সওয়াল-জবাবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে আইনজীবী আদালতে জানান, রাজ্য পুলিশ মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না ৷ তারা ব্যর্থ ৷ তখন রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী অর্ক নাগ জানান, সেখানে সাত কোম্পানি বিএসএফ রয়েছে ৷ কিন্তু শুভেন্দুর আইনজীবী পাল্টা অভিযোগ করেন, মুর্শিদাবাদের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট বিএসএফ-কে কাজ করতে দিচ্ছে না ৷ রাজ্য সরকার আদালতে জানায়, ডিজিপি মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে ৷ দু’তরফের সওয়াল-জবাবের পর বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ অশান্ত মুর্শিদাবাদে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফেরাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় ৷ আদালত জানায়, মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতিতে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না ৷ সেখানে শান্তি ও সম্প্রীতি ফেরানোই এখন মূল লক্ষ্য ৷ এদিন আদালত আরও জানায়, শুধু মুর্শিদাবাদই নয়, রাজ্যের অন্য কোথাও এই ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা ঘটলে সেখানেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আবেদন জানাতে পারে রাজ্য সরকার ৷সংসদে ওয়াকফ বিল পাশ হওয়ার পর গত সপ্তাহেই তাতে স্বাক্ষর করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷ এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ওয়াকফ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ চলতে থাকে ৷ পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের নানা জায়গা ওয়াকফ আইনকে ঘিরে অশান্ত হয়ে ওঠে ৷ গত 8 এপ্রিল থেকে মুর্শিদাবাদে চলতে থাকা এই পরিস্থিতি দিনে দিনে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৷ এদিকে শনিবার পুলিশ দাবি করেছে, সুতি, সামশেরগঞ্জের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ৷ কিন্তু সামশেরগঞ্জ কার্যত এদিন সকাল থেকেই উত্তেজনায় ফুঁসছে ৷ চাঁদপুর, ডাকবাংলা-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে হিংসাত্মক ঘটনার খবরও আসছে । ভেঙে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে জলঙ্গি বিডিও অফিস ৷ টহল দিচ্ছেন বিএসএফ জওয়ানরা ৷ হিংসায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক নাবালক-সহ তিন জনের ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, হিংসার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে 138 জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷এদিকে সামশেরগঞ্জে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার 163 ধারা জারি করা হয়েছে ৷ সব রকম জমায়েতও নিষিদ্ধ করা হয়েছে । বিএসএফ এলাকার দখল নিয়েছে বলে খবর মিলেছে । কেন্দ্রীয় বাহিনীও রুট মার্চ করছে বিভিন্ন এলাকায় ৷ সামশেরগঞ্জ কার্যত থমথমে ৷