
আপত্তিকর ভিডিও পোস্ট করে আলিপুরদুয়ারে ধৃত বিজেপির জেলা সম্পাদক বিপ্লব দাস
ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ভিডিও’র প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার করা হল বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সম্পাদক বিপ্লব দাসকে। সোমবার তাঁকে আলিপুরদুয়ার আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এদিকে, বিপ্লবকে গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে সরব হয়েছে দল। বিকেলে বিজেপির নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বর থেকে মিছিল শুরু করেন। আলিপুরদুয়ার থানার সামনে প্রতীকী অবস্থান বিক্ষোভ করেন তাঁরা। থানার গেটের সামনে বৃষ্টির মধ্যেই বসে অবস্থান বিক্ষোভ চলে। কোন ভিডিও নিয়ে এত জলঘোলা? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুরুচিকর ছবি পোস্ট করেছিলেন বারবিশার এক বাসিন্দা। তা দেখে সেই ব্যক্তিকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিপ্লবের বিরুদ্ধে। বারবিশার সেই বাসিন্দাকে জনসমক্ষে কান ধরে ওঠবস করানো হয়। তাঁকে দিয়ে ক্ষমা চাওয়ানোর পাশাপাশি এলাকাছাড়া করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপি’র আলিপুরদুয়ার জেলা সম্পাদক বিপ্লবের বিরুদ্ধে। সেই ‘শাস্তি’ দেওয়ার ভিডিও আবার ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। ঘটনা জানতে পেরে কুমারগ্রাম থানার বারবিশা ফাঁড়ির পুলিশ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে এবং এমন আপত্তিকর পোস্ট সমাজমাধ্যমে শেয়ার না করার জন্য সতর্ক করে দেয়। আর বিজেপির নেতার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে। বিপ্লবকে রবিবার রাতে বারবিশা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতেই বিজেপি নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ-আন্দোলন করতে পারে, এই আশঙ্কায় বারবিশা ফাঁড়ির নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হয়। কুমারগ্রাম, কামাখ্যাগুড়ি এবং ভাটিবাড়ি থেকে পুলিশকর্মীদের নিয়ে এসে বারবিশা ফাঁড়িতে মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে মধ্যরাতেই বারবিশা ফাঁড়িতে চলে আসেন কুমারগ্রাম থানার আইসি, কামাখ্যাগুড়ি ও ভাটিবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ওসিরাও। সেখান থেকে তাঁকে আলিপুরদুয়ার থানায় নিয়ে আসা হয়। এদিন আলিপুরদুয়ার থানার নিরাপত্তাও ছিল আঁটোসাঁটো। মূল গেট বন্ধ রাখা হয়। থানা চত্বরে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল। বেলা বাড়তেই বিজেপির নেতা-কর্মীরা আদালত চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। দলের নেতার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি মিঠু দাস বলেন, ‘বারবিশার এক ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ বিজেপির একাধিক মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করলে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হন। তাঁদের রোষ থেকে বিপ্লব সেই ব্যবসায়ীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। অথচ পুলিশ শাসকদলের নেতাদের কথামতো বিপ্লবকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোনও কড়া ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ দলদাসের মতো কাজ করছে।’ আলিপুরদুয়ার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী অবশ্য বলেছেন, ‘অভিযুক্ত ব্যবসায়ী ও বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপ্লবের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়। উসকানিমূলক মন্তব্য করার মতো অভিযোগ রয়েছে। এদিন আদালত থেকে বেরিয়ে আসার সময় বিপ্লব দাবি করেন, এসবই পুলিশ ও তৃণমূলের চক্রান্ত।