
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে ৫০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়ব না, বৈঠকে জানাল ডিভিসি
প্রতি বছর বর্ষার মরশুমে ডিভিসি-র (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) জল ছাড়া নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা যায় । জল ছাড়ার ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে অভিযোগ তোলে রাজ্য সরকার । এবার সেই অভিযোগ এড়াতে আগেভাগেই সতর্ক হল ডিভিসি । শুক্রবার কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার কর্তা এ সুরেশ কুমার জানিয়ে দিলেন, বড় কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপুল বৃষ্টিপাত না হলে ৫০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ডিভিসির পক্ষ থেকে ছাড়া হবে না । এদিন সুরেশ কুমার বলেন, “বর্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে । আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে ৫০ হাজার কিউসেকের বেশি জল ছাড়ব না ।” তিনি জানান, গত বছর রাজ্যকে না জানিয়ে হঠাৎ প্রায় ২ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার অভিযোগ উঠেছিল ডিভিসির বিরুদ্ধে । যার ফলে একাধিক জেলায় হঠাৎ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় । এ নিয়ে রাজ্য সরকারের তীব্র আপত্তি ছিল এবং রাজনৈতিক তরজাও হয় । তিনি আরও বলেন, “সম্প্রতি মুখ্যসচিবের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে । আমি নিজেও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম । সেখানে ডিভিসি ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে যে, যদি বিশেষ কোনও দুর্যোগ না ঘটে, তবে নির্ধারিত সীমার বেশি জল ছাড়া হবে না ।” সুরেশ কুমারের দাবি, রাজ্য সরকার প্রায়ই অভিযোগ তোলে যে ডিভিসি জল ছাড়ার আগে তাদের জানায় না, যা বাস্তবে ঠিক নয় । “আমরা সব পক্ষকে জানিয়েই জল ছাড়ি । তবে তাতে অনেক সময় জটিলতা হয় । আমরাও জানি জল ছাড়লে কী কী সমস্যা হতে পারে । সেই কারণেই আমরা এবার আরও সাবধান । মূলত তেনুঘাট বাঁধ থেকে জল ছাড়ার সময় বেশি সমস্যা হয় ।” তিনি আরও জানান, বর্ষা কাটার পর তেনুঘাট বাঁধে জরুরি সংস্কারের কাজ শুরু হবে । তবে শুধু বাঁধ সংস্কার করলেই সমস্যা মিটবে না । তাঁর কথায়, ডিভিসির রিজার্ভার থেকে পলি আমরা সরালেও নদীগুলিতে জমা পলি পরিষ্কারের দায়িত্ব রাজ্যের । কীভাবে সেই পলি সরানো যায়, সেটা সেচ দফতরকেই ভাবতে হবে ।” ডিভিসি কর্তা জানান, এবার শুরু থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে । বৃহস্পতিবারও সেচ দফতরের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয় । বাংলার পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের স্বার্থও দেখতে হয় তাদের । তবে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এবার যদি বড় কোনও বিপর্যয় না ঘটে, তাহলে 50 হাজার কিউসেকের বেশি জল ডিভিসির পক্ষ থেকে ছাড়া হবে না । এখন দেখার বিষয়, ডিভিসির এই অবস্থান রাজ্য সরকার কীভাবে গ্রহণ করে এবং বাস্তব পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হয় ।