
পুরীর মন্দিরে মহা সমারোহে পালিত হল জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা
সকাল থেকে পুরীর মন্দিরে মহা সমারোহে পালিত জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। স্নানযাত্রা ঘিরে দিন কয়েক আগে থেকে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রাকে ঘিরে ভক্তদের ঢল নেমেছে পুরীতে। এই মহা স্নানযাত্রা উৎসব দেখতে ভিড় জমিয়েছেন দেশ-বিদেশের লক্ষ লক্ষ ভক্ত ৷ স্নানযাত্রার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় রথযাত্রার কাউন্টডাউন। রথের আগে জৈষ্ঠ্য মাসের পূর্ণিমায় জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা পালিত হয়। লাখ ভক্ত সমাগম পুরীর জগন্নাথ ধামে। পুরীর জগন্নাথ ধাম প্রাঙ্গণে অবস্থিত সোনার কূপ (সুনা কুয়া) থেকে ১০৮টি ঘড়া জল দিয়ে স্নান করানো হয়েছে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার তিন বিগ্রহ। জগন্নাথ মন্দিরের উত্তর দিকে কূপ থেকে তোলা বিশুদ্ধ জল দিয়ে বিগ্রহ ধোয়ানো হয়। জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার দিন পুরীতে ১০৮ ঘড়া জলে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে স্নান করানোর প্রথা রয়েছে। এরপরই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুরীর রাজা গজপতি মহারাজ দিব্যসিংহ দেব ‘স্নান মণ্ডপ’ ঝাড়ু দেওয়ার অনুষ্ঠান করবেন । এরপর ১৫ দিন বন্ধ থাকবে মন্দিরের গর্ভগৃহের দরজা। এই সময় কোনও দর্শনর্থী দেবতাকে দর্শন করতে পারেন না। কথিত আছে এই সময় মন্দিরের ঘন্টা বাজানো, উলুধ্বনি পর্যন্ত দেওয়া হয় না। ধর্মীয় বিশ্বাস, স্নানের পর মহাপ্রভু শ্রী জগন্নাথের জ্বর আসে। তাই তাঁদের নির্জনে চিকিৎসা করা হয়। এ সময় তাঁদের অনেক ওষুধ দেওয়া হয়। অসুস্থতায় ভগবানকে শুধুমাত্র সাধারণ ভোগ নিবেদন করা হয়। এই ১৫ দিনে জগন্নাথকে ৫৬ ভোগ দেওয়া হয় না। ভগবানের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে ভক্তদের জন্য ১৫ দিন দর্শন বন্ধ রাখা হয়। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের এক আধিকারিক বলেন, “শ্রী সুদর্শনকে প্রথমে মন্দির থেকে বের করে আনা হয় এবং ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে স্নানবেদীতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে । এরপর, ভগবান বলভদ্র, দেবী সুভদ্রা এবং ভগবান জগন্নাথের মূর্তি স্নানবেদীতে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ ‘পহান্ডি’ অনুষ্ঠান সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে সম্পন্ন হয় ।” বুধবার পুরীর মন্দির প্রাঙ্গণে একটি খোলা প্যান্ডেলে স্নানযাত্রা অনুষ্ঠান হয় ৷ এই অনুষ্ঠান দেখার জন্য ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন ৷ পুরীর সাংসদ সম্বিত পাত্রের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী ‘উত্তর দ্বার’ দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন এবং সকালের প্রার্থনা ও দেবতাদের আনুষ্ঠানিক শোভাযাত্রা প্রত্যক্ষ করেন ৷