৮ দিনের পুলিশি হেফাজত নববধূ সোনম সহ ৫ অভিযুক্তের

মেঘালয়ের মধুচন্দ্রিমায় ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত নববধূ সোনম রঘুবংশী সহ ৫ জনের ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল শিলংয়ের আদালত ৷ ইন্দোর ও উত্তরপ্রদেশ থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে আনা ৫ অভিযুক্তকে বুধবার আদালতে পেশ করে শিলং পুলিশের বিশেষ দল ৷ এক আধিকারিক জানান, তদন্তের জন্য এদিন তাঁদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত ৷ মধুচন্দ্রিমার জন্য ইন্দোর থেকে মেঘালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন রঘুবংশী নবদম্পতি ৷ পাহাড়ে ঘেরা মনোরম পরিবেশের মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে ভালোবাসায় ভরা কিছু মুহূর্ত কাটাবেন ভেবেছিলেন ইন্দোরের রাজা রঘুবংশী ৷ কিন্তু, স্ত্রী সোনমের পরিকল্পনা ছিল অন্য ৷ আর তা ‘অপারেশন হানিমুন’ চালিয়ে ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে মেঘালয় পুলিশ ৷ দীর্ঘ ১৭ দিনের টানটান উত্তেজনার যবনিকা পতন ঘটেছে ইতিমধ্যেই ৷ সমস্ত প্রমাণ খতিয়ে দেখে মেঘালয় পুলিশের দাবি, প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা ও বাকিদের সহযোগিতায় সদ্য বিবাহিত স্বামী রাজা রঘুবংশীকে হত্যায় মূল অভিযুক্ত ইন্দোরের নববধূ সোনম রঘুবংশী ৷ তবে, কবে এই পরিকল্পনা করেন সোনম ও রাজ ? কীভাবে তাঁদের এই ভয়ঙ্কর পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া হয় ? ঘটনার সময় কে কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ? প্রতিটি তথ্য এবার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খুঁজে বের করতে মরিয়া মেঘালয় পুলিশের বিশেষ দল তথা সিট ৷ অভিযুক্তদের মেঘালয়ে নিয়ে এসে ঘটনার পুনর্নিমাণ করতে চলেছেন তাঁরা ৷ সোহরার এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশী খুনে অন্যতম অভিযুক্ত সোনমকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে ট্রানজিট রিমান্ডে মেঘালয়ে নিয়ে আনা হয়েছে ৷ মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ এরপর তাঁকে আদালতে পেশ করে পুলিশি হেফাজতের দাবি জানানো হবে ৷ বাকিদেরও খুব শীঘ্রই নিয়ে আনা হবে মেঘালয়ে ৷ এরপর তাঁদের স্থানীয় আদালতে পেশ করা হবে ৷ তারপর চলবে তদন্ত ৷ তিনি বলেন, “সোনমকে নিয়ে আসার পর তিনি গর্ভবতী কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয় ৷ তাঁকে স্থানীয় আদালতে পেশ করা হবে ৷ ঘটনায় ধৃত ৫ অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে, যাতে ঘটনার পুনর্নিমাণ করা সম্ভব হয় ৷” পূর্ব খাসি পর্বত জেলার পুলিশ সুপার বিবেক সিয়েম জানিয়েছেন, মধুচন্দ্রিমায় এসে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন হানিমুন’ ৷ তদন্তে ইন্দোর এবং গাজিপুর থেকে অভিযুক্তদের বাড়ি এবং অন্যান্য জায়গা থেকে একাধিক তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে ৷ আর সেই সমস্ত বিচার বিশ্লেষণ করে ঘটনার তদন্ত করা হবে ৷ তিনি আরও জানান, ইন্দোর থেকে ধৃত অভিযুক্তদের ৬ দিনের পুলিশি হেফাজত পাওয়া গিয়েছে ৷ পাশাপাশি, গাজিপুর থেকে ধৃত এক অভিযুক্তের জন্য ৩ দিনের হেফাজত পেয়েছে মেঘালয় পুলিশের সিট ৷ অন্যদিকে, ঘটনার তদন্ত যত এগিয়ে যাচ্ছে, ততই প্রকাশ্যে আসছে চাঞ্চল্যকর সমস্ত তথ্য ৷ মঙ্গলবার ইন্দোর পুলিশের এক আধিকারিক জানান, স্বামী রাজা রঘুবংশীকে হত্যার পর ইন্দোর ফেরেন সোনম ৷ সেখানে ৩ দিন একটি ভাড়ার ফ্ল্যাটেও থাকেন তিনি ৷ পুলিশ আধিকারিক বলেন, “২৫ মে থেকে ২৭ মে পর্যন্ত ইন্দোরের দেওয়াস নাকা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া নিয়ে থাকেন সোনম ৷ তবে এই বিষয়ে মেঘালয় পুলিশ বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবে ৷” ঘটনায় অভিযুক্ত বিশাল চৌহানের ইন্দোরের বাড়িতে তল্লাশি চালায় মেঘালয় পুলিশ ৷ ইন্দোরের এসিপি পুনমচন্দ্র যাদব জানান, চৌহানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সময় তাঁর পরনের জামা ও প্যান্ট বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ ৷ সেগুলিকে পরীক্ষার জন্য ফরেন্সিকে পাঠাবে মেঘালয় পুলিশ বলেও জানান তিনি ৷

error: Content is protected !!