‘গাফিলতির পরেও কী ভাবে আইবি প্রধানের মেয়াদ বাড়ল?’, পহেলগাম নিয়ে মোদি সরকারের আক্রমণ মহুয়ার

ভারতের মাটিতে ঢুকে ছবির মতো সুন্দর উপত্যকাকে মানুষের রক্তে স্নান করানোর মতো নৃশংস অপরাধ ঘটিয়ে ফেলেছে পাক জঙ্গিরা। এপ্রিলের সেই দুঃসহ সময়ের পর কাটতে চলেছে প্রায় ২ মাস। অথচ জঙ্গিরা এখনও ধরা পড়েনি কেন? এই সহজ প্রশ্নের উত্তর চেয়ে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা একাধিকবার কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন। সন্ত্রাস দমনে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে সংসদীয় প্রতিনিধিদল পাকিস্তানের মুখোশ খুলতে বিশ্ব ভ্রমণের পরও এ প্রশ্নের জবাব মেলেনি। পহেলগাঁও হামলার (Pahalgam Terror Attack) ৫৫ দিনের মাথায় ফের কেন্দ্রের কাছে পাঁচ প্রশ্নের জবাব চেয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারই এই নিয়ে কেন্দ্রের কাছে পাঁচটি প্রশ্নের জবাব চেয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই একই সুরে মোদি সরকারের কাছে পহেলগাম থেকে ভারত-পাক সংঘাত সংক্রান্ত আরও পাঁচটি প্রশ্নের জবাব চাইলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) চিফ তপন ডেকারের মেয়াদ বৃদ্ধি থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভারত-পাক সংঘাতে মধ্যস্থতা নিয়ে—কেন চুপ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সাংসদ। মঙ্গলবার এক ভিডিয়ো বার্তায় মহুয়া মৈত্র কেন্দ্রের উদ্দেশে তোপ দেগেছেন। মোদী সরকারের সামনে এক এক করে তুলে ধরেন পাঁচ প্রশ্ন। তাঁর প্রথম প্রশ্ন,‘এত হাই-সিকিওরিটি জ়োনে জঙ্গিরা ঢুকল কী ভাবে? কোথা থেকে এসেছিল তারা? সেখানে এসে এতগুলি মানুষের প্রাণ বিনা বাধায় কী ভাবে নিতে পারল তারা?’ এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল সাংসদের দ্বিতীয় প্রশ্ন সরাসরি মোদী সরকারের নীতি নিয়ে। পহেলগাম হামলার পরে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধান তপন ডেকারের মেয়াদ বৃদ্ধি করে কেন্দ্র। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তোপ দেগেছেন মহুয়া। তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দাদের নাকের ডগায় কী ভাবে ঘটল এত বড় ঘটনা? কোথায় খামতি? এর পরেও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধানকে কী ভাবে এক্সটেনশন দেওয়া হলো? আমরা কি আজকাল এমন গাফিলতির পুরস্কার দিচ্ছি?’ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই কেন্দ্রের কাছে তাঁর তৃতীয় প্রশ্ন,‘পহেলগাম হামলা চালানো জঙ্গিরা কারা? আমরা কি তাদের নাম পরিচয় জানি? ওরা কি বাইরের জঙ্গি না এখানকার?’ মোদী সরকারের বিদেশ নীতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ। ভারত-পাক সংঘাত নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবিতে নিরুত্তর থাকায় মহুয়ার নিশানায় কেন্দ্র। তিনি বলেন,‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেই চলেছেন ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি এটা করিয়েছেন। আমরা ১৪০ কোটির গণতান্ত্রিক দেশ। পহেলগামে যা হয়েছে তার উচিত শিক্ষা পাক জঙ্গিদের আমরা দিয়েছি।’ তাঁর চতুর্থ প্রশ্ন, ‘তৃতীয় কোনও রাষ্ট্র এসে কী ভাবে মধ্যস্থতা করল?’ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর থেকেই জবাবদিহি দাবি করেছেন তিনি।

তাঁর পঞ্চম প্রশ্ন, ‘১৩৩ দেশে ভারতের প্রতিনিধি দল গিয়ে পাক সন্ত্রাসবাদে কথা জানিয়েছে। কটা দেশ ভারতের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে? এ দিকে IMF এত কিছুর পর পাকিস্তানের বড় ঋণ মঞ্জুর করে দিল। সে সব কিছু নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে কি প্রশ্ন তুলেছে ভারত?’ এইসব নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদে বিরোধীরা কোনও স্পেশাল সেশন চাইলেও এড়িয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র বলে অভিযোগ সাংসদের। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই প্রশ্নের উত্তর চেয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব তিনি।

error: Content is protected !!