
‘শান্তিতে ঘুমোব না, আপনাদের জন্য কাজ করবো’, ভোটমুখী বিহারকে বার্তা প্রধানমন্ত্রী মোদির
উন্নয়নসূচকের নিরিখে বহুদিন ধরেই পিছিয়ে রয়েছে বিহার। জাতীয় গড়ের থেকেও নীচে রয়েছে এর সূচক। দারিদ্র, শিক্ষা, মাথাপিছু রোজগারের নিরিখে দেশের অন্য সব রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে বিহার। চলতি বছরের শেষেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে বিহার সফরে গিয়ে আগাগোড়া উন্নয়ন নিয়েই সওয়াল করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সিওয়ানের লোকোমোটিভ কারখানা থেকে উৎপাদিত প্রথম ইঞ্জিনের উদ্বোধন করতে শুক্রবার সিওয়ানে গিয়েছিলেন তিনি। বিহারে দাঁড়িয়ে মোদির আশ্বাস, ভারতের উন্নতিতে বড় ভূমিকা পালন করবে বিহার। বিহারে অন্তত ৩ কোটি পাকা বাড়ি তৈরির আশ্বাসও শোনা গিয়েছে মোদীর মুখে। তিনি বলেছেন, ‘মোদী শান্তিতে ঘুমোবে না, আপনাদের সবার জন্য কাজ করবে। আপনারা সবাই আমার পরিবার।’ সিওয়ানের জনসভা থেকে নরেন্দ্র মোদি তোপ দেগেছেন বিরোধীদের দিকে। তাঁর লক্ষ্য ছিল লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি এবং কংগ্রেস। দীর্ঘদিন ধরেই বিহারে লালুপ্রসাদ যাদবের শাসনকালকে ‘জঙ্গল রাজ’-এর সঙ্গে তুলনা করেছে বিজেপি। সেই প্রসঙ্গই এ বার মনে করিয়ে দিয়ে মোদীর অভিযোগ, ফের বিহারে ‘জঙ্গল রাজ’ তৈরির চেষ্টা করছে বিরোধীরা। কংগ্রেস ও আরজেডির নাম না তুললেও মোদীর মুখে শোনা গিয়েছে ‘পাঞ্জা’ আর ‘লণ্ঠন’ শব্দবন্ধ। যা যথাক্রমে কংগ্রেস ও আরজেডির নির্বাচনী প্রতীক। মোদীর এ দিন বলেন, ‘পাঞ্জা ও লণ্ঠনের শাসনে বিহার দারিদ্রের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। এনডিএ বিহারকে উন্নয়নের রাস্তায় ফিরিয়েছে।’ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘লাইসেন্স রাজ’-এর অভিযোগ শোনা দিয়েছে মোদীর মুখে। আর এভাবেই কংগ্রেসের নেতারা বড়লোক হলেও গরিবরা একই অবস্থায় রয়ে গিয়েছেন। পরিবারতন্ত্রের প্রসঙ্গ তুলেও একসারিতে রেখে নিশানা করেছেন আরজেডি ও কংগ্রেসকে। বিহারের জনসভার আগেই বিদেশ সফরে ছিলেন মোদী। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, অন্য দেশের রাষ্ট্রনেতারা ভারতের উন্নতিকে সমীহর চোখে দেখছেন। মোদীর আশ্বাস, ওরা মনে করছেন, ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক সুপার পাওয়ার হয়ে উঠছে… বিহার এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ দিন বিহারে একাধিক নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৫৯০০ কোটি টাকার ২৮টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈশালী-দেওরিয়া রেল প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেছেন। বিহারে এখন ক্ষমতায় জেডিইউ-বিজেপি জোট। বারবার শিবির পাল্টে শেষ পর্যন্ত বিজেপির সঙ্গেই ঘর করছে নীতিশ কুমারের জেডিইউ। কেন্দ্রে ম্যাজিক ফিগার পেরোতে বিজেপির অন্যতম ভরসা বিহারের জেডিইউ এবং তেলঙ্গনার টিডিপি। কেন্দ্রীয় বাজেটেও তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে। এ বার উন্নয়নের কথা বলে বিহারের ভোটের আগে প্রচারের সুর বেঁধে দিলেন মোদী, মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।