বারাসতে পুলিশ আবাসনের বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার চিকিৎসকের দেহ

বারাসতে বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার চিকিৎসকের দেহ। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতে কাছারি মাঠ সংলগ্ন পুলিশ আবাসন থেকে ২৬ বছর বয়সি দেবজিৎ ঘোষ নামে ওই চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছে।  পরিবারের অভিযোগ, ওই চিকিৎসকের জেঠু ও জেঠিমা ষড়যন্ত্র করে তাঁকে মেরে ফেলেছেন । সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বারাসত থানার পুলিশের তরফে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তরুণ চিকিৎসকের মৃত্যুর কারণ জানতে পরিবারের লোকেদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক দেবজিতের আদি বাড়ি নদিয়ার পলাশিপাড়ায় । তাঁর বাবা রাজ্য পুলিশের কর্মী। সেই সুবাদে দেবজিতের পরিবার বারাসতের ওই পুলিশ আবাসনে থাকতেন । ২০২৩ সালে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাশ করেন দেবজিৎ। চিকিৎসক হিসেবে ইতিমধ্যে রেজিস্ট্রেশন নম্বরও পেয়েছেন তিনি । পরিবারের দাবি, চিকিৎসক হওয়ার পরেও সরকারি কোনও হাসপাতালে ভালো পোস্টিং পাচ্ছিলেন তাঁদের ছেলে। এ নিয়ে মানসিক অবসাদ থেকে তরুণ ওই চিকিৎসক আত্মঘাতীর পথ বেছে নিয়েছেন কি না, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া। পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত থেকে দেবজিতের ঘর বন্ধ ছিল ভিতর থেকে । মা তাপসী ঘোষ মনে করেছিলেন, ছেলে হয়তো ঘুমাচ্ছেন । তাই তিনি ডাকাডাকি করেননি। তারপর মা ও বাবা পারিবারিক কাজে অন্যত্র গিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে বাড়ি ফিরে তাঁরা দেখেন, ছেলের ঘর সেভাবেই বন্ধ রয়েছে ভিতর থেকে । এতেই সন্দেহ হয় তাঁদের । ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি। দেবজিতের মোবাইলে ফোন করেও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। ফলে, সন্দেহ আরও দানা বাঁধে। তার পরেই ঘরের দরজা ভাঙা হয়। দেখা যায়, আবাসনের ঘরে দড়ির ফাঁসে ঝুলছে দেবজিতের দেহ।ঘটনা জানাজানি হতেই স্থানীয় বাসিন্দারা ভিড় করতে থাকেন পুলিশ আবাসনে।খবর পেয়ে রাতেই বারাসত থানার পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় বারাসত মেডিক‍্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এই বিষয়ে নিহতের মা তাপসী ঘোষ বলেন, “আমার ছেলে খুব ভালো ৷ কোনও অস্বাভাবিকতা ছিল না ৷ পরিবার ছিল তাঁর প্রাণ ৷ কিন্তু, হঠাৎই ছেলের আচরণে পরিবর্তন হতে শুরু করে ৷ আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয় ৷ ছেলে মেডিকেলে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই আমার ভাসুর ও বড় জা আমাদের ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন ৷ আমার ধারণা, কোনও তান্ত্রিককে ব্যবহার করে ছেলের মাথা বিগড়ে দেওয়া হয়েছিল ৷ তা না-হলে ও’র আচরণে অস্বাভাবিকতা থাকতে পারে না ৷ ছেলের মৃত্যুর জন্য ভাসুর ও বড় জা-ই দায়ী। ওরাই ছেলের মৃত্যুতে প্ররোচনা দিয়েছে ।” যদিও এ নিয়ে নিহতের জেঠু কিংবা জেঠিমা’র কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷ তবে তাঁদের পরিবার সূত্রে খবর, কোনও প্ররোচনা নয় ৷ মানসিক অবসাদ থেকেই দেবজিৎ আত্মহত্যা করেছেন।

error: Content is protected !!