ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির ১১ বছর পর মামলা পুনর্বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতিকে চিঠি অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার

ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি হয়েছে ১১ বছর আগে ৷ এবার তাঁর সেই মামলার পুনর্বিচারের দাবিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের দ্বারস্থ হল অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা । তাদের দাবি, আসল অপরাধীকে আড়াল করার জন্যই ধনঞ্জয়কে ফাঁসির কাঠে ঝোলানো হয়েছে ৷ ১৪ বছর বয়সি হেতাল পারেখ হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছিল ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় । দীর্ঘ ১৪ বছর মামলা চলার পর ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট । ২০০৪ সালে ফাঁসি হয় তার । রাজ্যে ওই শেষবার কোনও আসামির ফাঁসি হয়েছে । এই রায়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে নানা দ্বিমত রয়েছে । আর এবার দীর্ঘ ১১ বছর পর সেই মামলার পুনর্বিচারের দাবিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দফতরে চিঠি দিলেন অখিল ভারতীয় হিন্দুমহাসভার রাজ্য সভাপতি তথা ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চের কনভেনর চন্দ্রচূড় গোস্বামী । তিনি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দফতরে ধনঞ্জয়ের মামলা পুনর্বিচারের দাবিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে । চন্দ্রচূড়ের দাবি, রাষ্ট্রপতির সেক্রেটারি নিজেই জানিয়েছেন, ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চের আন্দোলন ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতির নজরে এসেছে । যদি সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে এই মামলা পুনর্বিচারের দাবি উঠে আসে, তাহলে রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে নিশ্চয়ই মামলা পুনর্বিচারের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে । এছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে আইনজীবীদের এই বিষয়ে অবগত করার জন্য প্রচার অভিযানও চালানো হয় । ধনঞ্জয় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চের আহ্বায়ক চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য, “আমরা ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা-সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের চিঠি দিয়ে পুনর্বিচারের দাবি জানিয়েছি । বাঁকুড়া জেলার ছাতনা অঞ্চলে আমাদের মঞ্চের পক্ষ থেকে মামলা পুনর্বিচারের দাবিতে সই সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হয়েছে । আমাদের এই উদ্যোগকে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারও স্বাগত জানিয়েছে । কিন্তু এখন বিষয়টি আর শুধুমাত্র একজন হতভাগ্য ব্যক্তি ধনঞ্জয় ও তাঁর পরিবার বা কুলোডিহি গ্রামের বিষয় হিসেবে সীমাবদ্ধ নেই । এই মুহূর্তে ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে প্রথম করা এফআইআর কপি থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারে ফাঁসি হওয়া পর্যন্ত সমস্ত ফাইল, নথিপত্র এবং তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে, যা প্রমাণ করে দেবে যে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় নির্দোষ ছিলেন । শুধুমাত্র দরিদ্র ব্রাহ্মণ ঘরের সন্তান হওয়ার অপরাধে তৎকালীন সিপিএম সরকার আসল অপরাধীকে আড়াল করার জন্য ধনঞ্জয়কে ফাঁসির কাঠে ঝুলিয়ে দিয়েছে ।” তিনি বলেন যে, দিনের শেষে ত্রুটিহীন বিচার ব্যবস্থা এবং অপরাধমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা স্থাপন করা সবার নৈতিক দায়িত্ব হওয়া উচিত ।

error: Content is protected !!