
নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিস ধরাল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের হুঁশিয়ারি
নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিস ধরাল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে বিশ্বভারতী সমস্ত ধরনের বলপ্রয়োগ করে দখল হওয়া জমি নিজেদের হেফাজতে নেবে বলেও জানিয়েছে ওই নোটিসে। তবে, তাঁকে ১৫ দিনের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নোবেলজয়ী চাইলে আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন। ততদিন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেবে না বলেই নোটিসে জানানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই নোটিস ঘিরে বিশ্বভারতী তথা শান্তিনিকেতনজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দিন দু’য়েক আগেই অবশ্য অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, তিনি জুন মাসে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জমি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। চিঠিতে অমর্ত্য আরও জানিয়েছিলেন, ৮০ বছর ধরে জমির চরিত্র একই রয়ে গিয়েছে। নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে এই লিজ দেওয়া জমি কেউ দাবি করতে পারেন না। যদিও, সেসবে আমলই দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। অমর্ত্য সেনের ওই বাড়িতে বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের। যা বারবার বিশ্বভারতী দাবি করে এসেছে। চলতি বছর জানুয়ারি মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত তিনবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে অমর্ত্য সেনকে চিঠি দিয়ে সেই বর্ধিত ১৩ ডেসিমেল জমি বিশ্বভারতীকে হস্তান্তর করার চিঠি দিয়েছিল। যদিও এ বিষয়ে অমর্ত্য সেন খুব একটা পাত্তা না দিয়ে তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়ি লিজ জমির পরিমাণ ১.৩৮ একর। ১৯৭১ সালের ভূমি দখলদারি উচ্ছেদ আইনে শুনানির জন্য চলতি মাসেই অমর্ত্য সেন বা তাঁর কোনও প্রতিনিধিকে ডাকা হয়েছিল। যদি অধ্যাপক সেন সশরীরে না আসতে পারেন, সেক্ষেত্রে এই ১৩ ডেসিমেল জমি তাঁকে উচ্ছেদ করা হবে না কেন, তার সদুত্তর চাওয়া হয়েছিল। যদিও উত্তরে অমর্ত্য সেন জানান, জমি ১.৩৮ একর জমি লিজ হিসেবে বিশ্বভারতী দিয়েছিল। যে জমি বিগত ৮০ বছর ধরে তিনি ব্যবহার করছেন এবং সেই জমির অধিকারী তিনি নিজেই। বিশ্বভারতী অমর্ত্য সেনের উত্তরে সন্তুষ্ট না হওয়ায়, এবার করা পদক্ষেপের পথে হাঁটল। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওই ১৩ ডেসিমেল জমি না ফেরত দিলে বল প্রয়োগ করে সেই জমি দখল নেবে বিশ্বভারতী এবং এই জমি সুস্থভাবে না ফেরত দিলে দায়ী থাকবে অমর্ত্য সেন এবং সংশ্লিষ্ট মানুষজন। সব মিলিয়ে শান্তিনিকেতনে নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেনের বাড়ির জমি নিয়ে বিতর্ক জিইয়ে রইল।