
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ডাকা বনধে স্তব্ধ শিলিগুড়ি, গ্রেফতার ৭
রাজ্যে হিন্দু নির্যাতন ও বজরং দলের সদস্যদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ডাকা ২৪ ঘণ্টার বনধে কার্যত স্তব্ধ গোটা শিলিগুড়ি মহকুমা। বনধের জেরে সোমবার সকাল থেকে শিলিগুড়ি শহরে খোলেনি দোকানপাট। শহরের মোড়ে মোড়ে পিকেটিং করেন বনধ সমর্থকরা। তৃণমূল জমানায় শেষ কবে রাজ্যের কোথাও এমন সর্বাত্মক বনধ দেখা গিয়েছে মনে করতে পারছেন না অনেকেই। সোমবার সকাল ৬টা থেকে বনধের সমর্থনে শিলিগুড়ির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পিকেটিং শুরু করেন বনধ সমর্থকরা। তিনবাত্তি মোড়, জলপাই মোড়, জংশন, হাসমি চক, নৌকাঘাটে রাস্তায় নামতে দেখা যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সমর্থকদের। হিলকার্ট রোডে বনধ সমর্থকরা একটি ব্যাঙ্কের শাখার শাটার বন্ধ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বেঁধে যায়। এর জেরে হিলকার্ট রোড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের ওপর লাগাতার অত্যাচার ও বজরং দলের গোরক্ষকদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে এই বনধ। শিলিগুড়ির জলপাই মোড়ে বনধ সমর্থনে পিকেটিং করতে গেলে ৭ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যদের গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। অন্যদিকে, হাসমি চকে সরকারি এনবিএসটিসি বাস আটকে বিক্ষোভ দেখায় বনধ সমর্থনকারীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বনধের সমর্থনে এদিন রাস্তায় নামে বঙ্গীয় হিন্দু মহামঞ্চ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সদস্যরা। উত্তরবঙ্গের সব থেকে বড় নিয়ন্ত্রিত বাজার শিলিগুড়ির রেগুলেটেড মার্কেটও এদিন সকাল থেকে বন্ধ দেখা যায়। বনধের সময় যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে কারণে শহরের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। রেগুলেটেড মার্কেট, হাসমি চক, প্রধাননগর, গুরুংবস্তি, মাটিগাড়ায় পিকেটিং করতে দেখা যায় বনধ সমর্থনকারীদের। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে রাস্তায় লোকের সংখ্যা কিছুটা বাড়তে শুরু করে। এদিকে সরকারি বাস নামলেও তাতে যাত্রী সংখ্যা ছিল হাতেগোনা।সংগঠনের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ গরু পাচারকারীদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। তাই গরু পাচারকারীদের গ্রেফতার করার বদলে গোরক্ষকদের গ্রেফতার করছে তারা।বনধ সফল ও সর্বাত্মক বলে দাবি করে শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভায় বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ বলেন, আজ শিলিগুড়ি দেখিয়ে দিল পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা কতটা একজোট হয়েছে। পুলিশ ও দলের গুন্ডা নামিয়েও বনধে দাঁত ফোটাতে পারেনি রাজ্যের জেহাদি সরকার। এই বনধ সরকারকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। জনতা বলে দিয়েছে তারা অনৈতিকভাবে গ্রেফতার করা বজরং দলের সদস্যদের মুক্তি চায়।