মুর্শিদাবাদে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ, ‘ব্লক’ ২ হাজারের বেশি সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট, গ্রেপ্তার ২২১

মুর্শিদাবাদের সুতি, সামশেরগঞ্জ এবং সংলগ্ন এলাকায় গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হয়েছে। মঙ্গলবার এমনটাই জানানো হলো রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে। এই কাজে যারা ইন্ধন জুগিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানালেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানান, ‘গত ৪৮ ঘণ্টায় ধুলিয়ান এবং সংলগ্ন এলাকায় নতুন করে কোনও অশান্তির খবর মেলেনি। তবে এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’  সঙ্গত, সামশেরগঞ্জ এবং সুতিতে অশান্তির পর জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান, ফরাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম-সহ তৃণমূলের প্রায় সমস্ত শীর্ষ নেতা দাবি করেছিলেন, পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে মুর্শিদাবাদে হিংসা ছড়ানো হয়েছে। জেলা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, ‘সুতি, সামশেরগঞ্জের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই বিস্ফোরক তথ্য আমাদের হাতে আসছে।’ পুলিশ সূত্রের খবর, গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে অশান্তি ছড়ানোর প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে।  এডিজি জানান, ‘ফেসবুক, এক্স হ্যান্ডেল, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামের মতো সমাজমাধ্যম ব্যবহার করে বেশ কিছু ব্যক্তি সামশেরগঞ্জ এবং সুতির ঘটনায় প্ররোচনামূলক বক্তব্য ছড়িয়েছেন। ইতিমধ্যেই আমাদের তরফ থেকে এমন ২০৯৩টি অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করে সেগুলোকে ‘ব্লক’ করা হয়েছে।’ পুলিশ সূত্রের খবর, এই ধরনের আরও কিছু সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া চলছে এবং সেগুলোকেও ‘ব্লক’ করা হবে’। সুপ্রতিম সরকার জানান, ‘যে সমস্ত ব্যক্তিরা গুজব ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’ এডিজির দাবি ,গত ৪৮ ঘণ্টায় নতুন করে আর কোনও গন্ডগোলের খবর মেলেনি। ধুলিয়ানের পরিস্থিতি প্রায় স্বভাবিক।  অন্যদিকে, সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদ এলাকায় দুই ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগে ডিগ্রি এলাকার বাসিন্দা দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করল এসটিএফ। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) জানান, ‘ওই খুনের ঘটনায় দোষীদের ধরার জন্য সিআইডি, রাজ্য পুলিশ, স্থানীয় পুলিশ ছাড়াও আইবি এবং এসটিএফ -এর আধিকারিকদের নিয়ে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছিল। এলাকার একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার পর কয়েকজন দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করা হয়। সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে বীরভূমের মুরারই এবং সুতি থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্পর্কে তারা দাদা এবং ভাই হয়।’  তিনি জানান, ‘এই খুনের পরিকল্পনা যারা করেছিল এবং এই ঘটনার সঙ্গে আর যারা জড়িত রয়েছে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না। পুলিশ বাকি অভিযুক্তদের সন্ধানেও তল্লাশি চালাচ্ছে।’ ধৃত ব্যক্তিদের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করে মঙ্গলবার তাদের জঙ্গিপুর আদালতে পেশ করা হয়েছে।

error: Content is protected !!