
১৮-১৯ জুন প্রশিক্ষণ, উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলার বিএলওদের দিল্লিতে ডাক
পশ্চিমবঙ্গে ত্রুটিহীন ভোটার তালিকা তৈরিই নির্বাচন কমিশনের কাছে চ্যালেঞ্জ। বিশেষত, বাংলাদেশি কোনও ভোটার এদেশের ভোটার তালিকায় নাম তুলেছে কিনা, তা বাছাই করাই এবার তাদের কাছে চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন। অন্য রাজ্য হলে ভাষার ফারাক দেখে অপেক্ষাকৃত সহজে ধরে ফেলা যায়। কিন্তু বাংলায় তা অনেকটাই কঠিন। তারই সঙ্গে চ্যালেঞ্জ অহেতুক বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের প্রকৃত বাসিন্দার নাম বাদ পড়ে গেলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। এমনিতেই কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ কম নয়। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের আগামী বছরের ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। বাংলায় যারা নির্বাচনের কাজ করবেন, সেই বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও), ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইএলও) এবং রিটার্নিং অফিসার (আরও)দের দিল্লিতে ডেকে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রশিক্ষণ। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ডুপ্লিকেট’ ভোটার কার্ড ইস্যুতে সরব হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৯ এবং ২০ জুন দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৭০ জন বিএলও’কে। পাঁচজন সাবডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট এবং একজন জেলাশাসক। বিধানসভা ভোটে সাধারণ সাবডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটদের রিটার্নিং অফিসার হিসেবে কাজে লাগানো হয়। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়াদিল্লির ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট’ নামে যে প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেখানেই দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ। কোচবিহার, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং উত্তর দিনাজপুর, এই পাঁচ জেলার নির্বাচন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বাংলার এই জেলায় বাংলাদেশি ভোটাররা পশ্চিমবঙ্গের ভোটার সেজে থাকতেও পারে বলে মনে করছে কমিশন। তাই দুই বাংলার ভাষার তফাৎ, কবে তৈরি হয়েছে কার্ড, আগে কোথায় কার্ড ছিল ইত্যাদি জেনে ‘প্রকৃত’ যাচাই কীভাবে হতে পারে, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ভোটার তালিকা তৈরিতে কী কী সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় বাংলার ভোটকর্মীদের, তাও জেনে নেবে কমিশন।
এবার পশ্চিমবঙ্গে কোনও একটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশি ভোটার নিয়ে ভুরিভুরি অভিযোগ করতে পারে। আগে কাগজে কলমে অভিযোগ জমা পড়ায় তা দেখে যাচাই করা অনেকটা সুবিধা ছিল বলেই কমিশনের মত। কিন্তু এখন অভিযোগ জমা পড়ে অনলাইনে। সেগুলি দেখে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়ে ‘প্রকৃত’ বাসিন্দা বাছতে হবে। ফলে কাজের বহর আগের চেয়ে বেড়েছে।