বাহিনীর গতিবিধির লাইভ কভারেজ নয়, ‘নির্দেশিকা’ জারি কেন্দ্রের

দিনভরের ঘটনা পরম্পরা থেকে অন্তত তেমনই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। পহেলগাঁও হামলায় দোষী ও চক্রান্তকারীদের কঠোরতম সাজাদানের শপথ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রতিশোধের প্রতিজ্ঞা করেছেন। উভয়ই পূরণের সময় সমাগত। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ভারত বড়সড় পদক্ষেপ নিতে পারে বলে সরকারি স্তরেই জল্পনা তুঙ্গে। অর্থাৎ সামরিক অপারেশন যে কোনও সময়। এদিন তার অন্যতম ইঙ্গিতবাহী সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে সরকার নিজেই। কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক বিস্তারিত নির্দেশিকা জারি করে প্রধানত নিউজ চ্যানেল, ডিজিটাল পোর্টালদের জানিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর গতিবিধির কোনওরকম সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। এমনকী সামরিক অভিযান সংক্রান্ত কোনও তথ্য‌, সম্ভাব্য পদক্ষেপ, স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত প্রচার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেবল টিভি নেটওয়ার্কস সংশোধিত আইন অনুযায়ী এই নিয়ম প্রযোজ্য সোশ্যল মিডিয়ার উপরও।  শুক্রবার সারারাত ধরে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়েছে পাকিস্তানি সেনা। সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, উরি ও সুন্দরবনি সেক্টরে পাক সেনার বিভিন্ন পোস্ট থেকে গুলি চালানো হয়। পাল্টা জবাব দিয়েছেন ভারতীয় জওয়ানরাও। সকালে সেই খবর আসার পর, বিকেলেই সংবাদমাধ্যমের জন্য নির্দেশিকা জারি করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। নির্দেশিকায় বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে আইসি ৮১৪ বিমান অপহরণ, কার্গিল যুদ্ধ এবং মুম্বই হামলার কথা। সেই সময় নিউজ চ্যানেলগুলি যেভাবে রিয়েল টাইম কভারেজ অর্থাৎ ঘটনার সরাসরি সম্প্রচার করেছে, তার চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল রাষ্ট্রীয় স্বার্থে। তাই জাতীয় নিরাপত্তার খাতিরে এদিন থেকেই সেব্যাপারে জারি হচ্ছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। আর্মি, নেভি এবং এয়ারফোর্সের কোনওরকম সক্রিয়তার দৃশ্য সরাসরি প্রচার করা যাবে না। এমনকী স্যাটেলাইট ই঩মেজের মাধ্যমে সেইসব স্পর্শকাতর মুভমেন্ট পর্যন্ত নয়। রাতে কাশ্মীরে জারি হয়েছে মেডিক্যাল ইমার্জেন্সিও। ফলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এদিন থেকেই সামরিক মুভমেন্ট শুরু হতে চলেছে? মোদি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ যে কোনও সিদ্ধান্তে অদৃশ্য সিলমোহর থাকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের। এদিন স্বামী বিজ্ঞানানন্দজীর লেখা একটি গ্রন্থ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত স্বয়ং তেমনই এক তাৎপর্যপূর্ণ আভাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ধর্মই হল অহিংসা। কিন্তু অত্যাচারীকে ধ্বংস করাও ধর্মপালন। সেটা অহিংসাই। আমরা প্রতিবেশীর ক্ষতি করি না। কিন্তু অপরাধীকে শাস্তিপ্রদান রাজার কর্তব্য। এটাই নিয়ম।’ এই মন্তব্যকে মনে করা হচ্ছে সামরিক পদক্ষেপেরই সবুজ সংকেত। সীমান্তে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের হুমকিতে। এদিন তিনি সাফ বলেছেন, ‘ভারত যদি পাকিস্তানকে সিন্ধুর জল থেকে সামান্যতম বঞ্চিত করে, তাহলেই যুদ্ধ। সর্বশক্তি দিয়ে আমরা প্রাপ্য বুঝে নেব।’ আবার বিরোধী দলনেতা বিলাওয়াল ভুট্টোর মুখে শোনা গিয়েছে, ‘সিন্ধুর জল আটকে গেলে রক্তের নদী বইবে! ভারত যেন প্রস্তুত থাকে।’ ব্রিটেনে পাক দূতাবাসের সামনে প্রবাসী ভারতীয়দের বিক্ষোভের সময় গলা কেটে দেওয়ার অঙ্গভঙ্গি করেছেন এক পাকিস্তানি সেনাকর্তা। ইসলামাবাদ হঠাৎ এভাবে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছে কেন? কারণ পাকিস্তান জানে, ভারত প্রস্তুত! আঘাত যে কোনও সময়!

error: Content is protected !!