
যাদবপুরের পর এবার কলকাতা পুরসভাতেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাদাগিরি, হামলা কাউন্সিলরদের ওপর
যাদবপুরের পর এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের মস্তানি দেখা গেল কলকাতা পুরসভাতে। শ্যামপুকুর বিধানসভা এলাকার বিডন স্ট্রিট সংলগ্ন ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিজেপি নেতা সুনীল সিংহের বাড়ির অংশ বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙ্গে দেয় কলকাতা পুরসভা। তা নিয়েই দিনভর উত্তপ্ত হয় কলকাতার পুর অধিবেশন। পুরসভায় তৃণমূল কাউন্সিলরদের সঙ্গে কার্যত হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কাউন্সিলররা। আর সেই হাতাহাতি হওয়ার সময় অধিবেশন কক্ষের মধ্যে যাদবপুরের পর ফের কেন্দ্রীয় বাহিনীর জবানের মস্তানি প্রকাশ্যে দেখা যায়। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দিয়ে হামলা চালায় বিজেপি। পাল্টা বিজেপির দাবি, তৃণমূল কাউন্সিলরেরাই জবরদস্তি মারধর করেন তাঁদের। বাঁচাতে এসে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা (Central Force)আক্রান্ত হন।কলকাতা পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা স্থানীয় বিজেপি নেতা সুনীল সিংহের অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বুলডোজ়ার চালিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত কলকাতা পুরসভা(KMC)। যদিও পুরসভার দাবি, বাড়িতে নয়, বাড়ির বেআইনি অংশ বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তা নিয়েই শনিবার পুর অধিবেশনে সরব হন বিজেপির কাউন্সিলরেরা। অধিবেশনের শেষ প্রান্তে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সজল ঘোষ বিষয়টি তোলেন। কিন্তু চেয়ারপার্সন মালা রায় তাঁকে জানান, অধিবেশনে এই নিয়ে আলোচনা করা যায় না। প্রয়োজনে মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি। তখন সজল ঘোষ পাল্টা মানবিকতার খাতিরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে কোনও নাগরিকের বাড়ি ভেঙে দেওয়া যায় না। দয়া করে মানবিকতার খাতিরে বিষয়টি দেখুন।’’ অধিবেশনে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিজেপি কাউন্সিলরদের সঙ্গে চেম্বারে কথা বলবেন বলে জানান।
অধিবেশন শেষ হতেই বিজেপি কাউন্সিলররা কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলার ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক শুরু করে দেন। সেখানে বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝা, মীনাদেবী পুরোহিত এবং সজল ঘোষের পাশাপাশি, হাজির ছিলেন অভিযোগকারী সুনীল সিংহ। ছিলেন উত্তর কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষও। সাংবাদিক বৈঠক মিনিট দশেক চলার পরেই সেখানে প্রবেশ করেন তৃণমূল কাউন্সিলর মহেশ শর্মা। তাঁর প্রশ্ন, কাউন্সিলর ক্লাব শুধুমাত্র কাউন্সিলরদের জন্য, সেখানে বিজেপির জেলা সভাপতি কী করে সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন? পাল্টা সজলরা বলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই করদাতা। সুতরাং সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করার অধিকার সকলেরই আছে। কাউন্সিলর ক্লাবে চলে আসেন বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত, অসীম বসু, রাজীব দাস, কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলররা। তার পর দু’পক্ষের কার্যত ধস্তাধস্তি বেধে যায়। খবর পেয়ে ছুটে আসে কলকাতা পুলিশ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ ধরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকার পর ধীরে ধীরে কলকাতা পুলিশের হস্তক্ষেপে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।