‘মুসলমানকে দলের প্রেসিডেন্ট করেন না কেন’? আম্বেদকরের জন্মবার্ষিকীতে কংগ্রেসকে তোপ প্রধানমন্ত্রী মোদির

ওয়াকফ (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে সরব বিজেপি বিরোধী দলগুলি। প্রতিবাদে মুখর মুসলিমদের নানা সংগঠন। এর মধ্যেই ওয়াকফ নিয়ে কংগ্রেসের অবস্থানকে কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বি আর আম্বেদকরের জন্মবার্ষিকীতে কংগ্রেসকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার মোদি বলেছেন যে, কংগ্রেস কেবল মুসলিম মৌলবাদীদের তোষণ করেছে, নতুন আইনের বিরোধিতাই এর প্রমাণ। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন দলীয় সভাপতির পদে কংগ্রেস একজন মুসলিমের নাম ঘোষণা করে না? এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর জানতে চান, কংগ্রেস নির্বাচনী টিকিক বিতরণের সময় কেন মুসলিম প্রার্থীদের জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেনি? সোমবার প্রধানমন্ত্রী হরিয়ানার হিসার বিমানবন্দরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “বিমানবন্দরটি রাজ্যের উন্নয়ন যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে।” সংবিধানের স্থপতি বিআর আম্বেদকরকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, “ডঃ আম্বেদকরের সংগ্রাম তাঁর সরকারকে অনুপ্রাণিত করে। প্রতিটি সিদ্ধান্ত এবং নীতি বাবাসাহেব আম্বেদকরের প্রতি নিবেদিত।” কংগ্রেসকে নিশানা করে মোদি বলেন, “বিরোধী দল সংবিধানকে ক্ষমতা অর্জনের হাতিয়ার করে তুলেছে। জরুরি অবস্থার সময় ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য সংবিধানের চেতনাকে হত্যা করা হয়েছিল। সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিক বিধির কথা বলে, কিন্তু কংগ্রেস কখনও তা বাস্তবায়ন করেনি। আজ, উত্তরাখণ্ডে একটি অভিন্ন নাগরিক বিধি কার্যকর করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, কংগ্রেস এর বিরোধিতা করছে। কংগ্রেস কখনও সংরক্ষণের সুবিধা তফশিলি জাতি/উপজাতি এবং অন্য়ান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছেছে কিনা তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেনি।” মোদির আরও বলেন, “বাবাসাহেব আম্বেদকর জীবিত থাকাকালীন দল তাঁকে বারবার অপমান করেছে। তারা তাঁকে দু’বার নির্বাচনে হারাতে বাধ্য করেছে। কংগ্রেস তাঁকে উৎখাত করতে চেয়েছিল, তারা তাঁকে সিস্টেম থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করেছিল। তাঁর মৃত্যুর পর, তারা তাঁর স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টাও করেছিল। বাবাসাহেব সাম্যের পক্ষে ছিলেন, কিন্তু কংগ্রেস সারা দেশে ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির ভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিআর আম্বেদকর ধর্মীয় ভিত্তিতে সংরক্ষণ বাতিল করেছিলেন। কংগ্রেসের তোষণের রাজনীতি মুসলিমদেরও ক্ষতি করেছে। কংগ্রেস কেবল কিছু মৌলবাদীকে খুশি করেছে। সমাজের বাকি অংশ অশিক্ষিত এবং দরিদ্র রয়ে গিয়েছে। এই ভুল পদ্ধতির সবচেয়ে বড় প্রমাণ ওয়াকফ আইনে রয়েছে।” কংগ্রেস রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ওয়াকফ আইনে ইচ্ছামত পরিবর্তন এনেছে এবং এই পরিবর্তনগুলি সংবিধানকে উল্টে দিয়েছে বলে দাবি প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বলেন, “আমি এই ভোটব্যাঙ্ক ক্ষুধার্ত নেতাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই, যদি আপনারা মুসলমানদের কথা ভাবেন, তাহলে কংগ্রেস কেন একজন মুসলিমকে তাদের দলের সভাপতি করেনি? লোকসভা নির্বাচনে ৫০ শতাংশ টিকিট মুসলমানদের দিন। যদি তারা জেতেন, তাহলে তারা তাদের মতামত প্রকাশ করবেন। কিন্তু না, কংগ্রেস ওদের (মুসলিমদের) কিছুই দেবে না। তারা নাগরিকদের অধিকার ছিনিয়ে নেবে। তাদের উদ্দেশ্য কখনও কারও জন্য ভালো কিছু করা ছিল না।”  সংশোধিত ওয়াকফ আইনের পক্ষে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “লক্ষ লক্ষ হেক্টর জমি ওয়াকফ সম্পত্তি। যদি ওয়াকফ সম্পত্তি সৎভাবে ব্যবহার করা হত, তাহলে মুসলিম যুবকদের সাইকেলের পাংচার মেরামত করে জীবিকা নির্বাহের প্রয়োজন হত না। কিন্তু, এই সম্পত্তি থেকে কেবল কয়েকজন ভূমি মাফিয়া উপকৃত হত। এই মাফিয়ারা দলিত, অনগ্রসর এবং বিধবাদের জমি লুট করছিল। ওয়াকফ আইনে এই পরিবর্তনের পর দরিদ্রদের লুটপাট বন্ধ হয়ে যাবে। নতুন ওয়াকফ আইনের অধীনে, আদিবাসীদের জমি বা সম্পত্তি ওয়াকফ বোর্ড স্পর্শ করতে পারবে না। দরিদ্র মুসলিম এবং পশমন্ডা মুসলিমরা তাদের অধিকার পাবে। এটাই প্রকৃত সামাজিক ন্যায়বিচার।” তিনি বলেন।” খাড়গের দাবি, আম্বেদকরের কোন আদর্শ গ্রহণ করেছে, তার বিবরণ দিক বিজেপি। আইনসভায় মহিলাদের সংরক্ষণের বিল পাশ হয়ে গেলেও কেন তা কার্যকর হয়নি, প্রশ্ন কংগ্রেস সভাপতির।

error: Content is protected !!