চোপড়ায় সালিশি সভায় যুবক-যুবতীকে ‘মার’!

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে সালিশি সভা ডেকে যুবক-যুবতীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল বিধায়কের খাস লোকের বিরুদ্ধে ৷ মারধরের ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ৷ সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ব্লকে ৷ এই ঘটনায় জড়িত মূল অভিযুক্ত চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের খাস লোক ৷ অভিযোগ, এই জেসিবি-র বিরুদ্ধে ইসলামপুর পুলিশ জেলার একাধিক থানায় খুন, সন্ত্রাসের মামলা দায়ের হয়েছে ৷ কিন্তু, বিধায়কের খাস লোক হওয়ায়, পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে না ৷ আর অভিযোগটা অমূলক নয় ৷ স্বয়ং হামিদুল রহমান ক্যামেরার সামনে তাঁকে আড়াল করার চেষ্টা করলেন ৷এমনকী বিধায়ক নিজেই ঠিক-বেঠিক বিচার করতে বসলেন ৷ তাঁর বক্তব্য, “আপনারা সংবাদমাধ্যমে বিষয়টা নিয়ে বেশি খুঁচিয়ে বেড়াচ্ছেন ৷ ওই মহিলা নিজে তো অভিযোগ দায়ের করেননি ৷ আর ওই মহিলা স্বামীকে ছেড়ে, অসামাজিক কাজ করেছিল ৷ আর তাই গ্রাম্য বৈঠক ডেকে যেমন হয়, তেমন বিচারসভা বসেছিল ৷”তৃণমূলের এই বিধায়ক অবশ্য মহিলা এবং তাঁর প্রেমিককে মারধরের ঘটনাকে সামান্য বাড়াবাড়ি বলে উল্লেখ করেছেন ৷ তবে, পর মুহূর্তেই ফের একবার নির্যাতিতা মহিলার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুললেন হামিদুল রহমান ৷ তাঁর কথায়, “গ্রামবাসীদের তরফে একটু বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গিয়েছে ৷ এর জন্য আমরা দুঃখিত ৷ ব্যাপারটা আমরা দেখছি… কিন্তু, ওই মহিলাও তো অন্যায় করেছেন ৷ স্বামী-সন্তান ছেড়ে দুঃশ্চরিত্রা হয়েছেন ৷ এখন আমাদের সমাজের মধ্যে একটা বিচার হয়েছে ৷” এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানহাইয়া লাল বলেন, “পুলিশ প্রশাসনকে ফোন করে বলছি, বিষয়টা দেখছে। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে। জেসিবি যেই হোক না কেন।” তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বিধায়ক হামিদুর রহমানের বক্তব্য, “আমি হোয়াটসঅ্যাপে এই ভিডিয়ো দেখেছি। ১ ঘণ্টা আগে ভিডিয়োটা দেখেছিলাম। আমি জেসিবি-দের ডেকে পাঠিয়েছি। শুনতে হবে কী হয়েছিল আসলে। সবাই তৃণমূলের। এটা নিয়ে তিলকে তাল করছেন কেন?” বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলায় এ ধরনের অজস্ত্র ঘটনা ঘটে। কিন্তু অপরাধগুলোকে চেপে দেওয়া হয়। বারাসতের একটি ছেলে বিয়ে করেছিল ভিন ধর্মের মেয়েকে। সে যখন এক বছরের শিশুপুত্রকে দেখতে শ্বশুরবাড়িতে গেল, তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভ্যানচালক তাঁকে তুলি নিয়ে গিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি করান। এখন হাইকোর্টে মামলা চলছে। এই ধরনের ঘটনা ঘটছেই। বিধায়ক তাঁকে চিনবেই। ব্যক্তিগত মানসিকতার কারণে হয়নি।”

error: Content is protected !!