বিপুল ঋণের পরিশোধ না করতে পারায় আত্মঘাতী দম্পতি

কুলটির আলডি গ্রামে বাড়ি থেকে উদ্ধার দম্পতির দেহ। পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিপুল টাকা ঋণ ছিল তাঁদের। ঋণ শোধ করতে না পারায় একাধিকবার অপমানিত হতে হয়েছে তাঁদের। সে কারণে সম্ভবত মানসিক অবসাদে চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দম্পতি। নিহতেরা হলেন বছর চল্লিশের রূপকুমার বাউড়ি এবং পঁয়ত্রিশের মালা বাউড়ি। কুলটির আলডি গ্রামের দীর্ঘদিনের বাসিন্দা দম্পতি। তাঁদের চার মেয়েও রয়েছে। একজনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তিনজন অবিবাহিত। রূপকুমার রাজমিস্ত্রি। মালা পরিচারিকার কাজ করেন। শুক্রবার রাতে রূপকুমার ও মালা একটি ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। পাশের ঘরে ছিল তিন মেয়ে। দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও বাবা-মায়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে তিন মেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে। তারাই শনিবার সকালে দুজনকে ঘুম থেকে ডাকতে যান। ঘরে ঢুকে তাজ্জব হয়ে যায়। দেখে মেঝেতে পড়ে রয়েছেন মালা। তাঁর গলার নলি কাটা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে গোটা ঘর। ওই ঘরেই ফ্যান থেকে ঝুলছে রূপকুমারের দেহ। খবর পাওয়ামাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। দম্পতির তিন মেয়ের সঙ্গে কথাও বলেন তদন্তকারীরা। তারা জানায়, শুক্রবার রাতে পাশের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে অনেক রাত পর্যন্ত সাউন্ড বক্স বাজছিল। তাই বাবা-মা শুক্রবার রাতে ঝগড়াঝাটি করেছেন কিনা, তা তাদের জানা নেই। তবে সংসারে নিত্য অভাবের জেরে দম্পতির মধ্যে প্রায় অশান্তি লেগেই থাকত। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দাবি, বহু জায়গা থেকে লোন নিয়েছিলেন তাঁরা। তবে লোন পরিশোধ করতে পারছিলেন না। সে কারণে প্রায়শয়ই বাড়িতে লোন কারবারিদের আসা যাওয়া লেগে থাকত। একাধিকবার নাকি অপমানিতও হতে হয়েছে দম্পতিকে। তার জেরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন দুজনে। প্রাথমিকভাবে অনুমান, সে কারণে স্ত্রীর গলার নলি কেটে খুন করে আত্মহত্যা করেন রূপকুমার। আপাতত ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় তদন্তকারীরা।

error: Content is protected !!