
আজ বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ, অশান্তি রুখতে কড়া নিরাপত্তা বন্দোবস্ত লালবাজারের
সামনেই বিধানসভা নির্বাচন ৷ তার আগে আজ সিপিএমের একাধিক গণসংগঠনের ডাকে ব্রিগেড সমাবেশে । ধর্মীয় মেরুকরণ ও দুর্নীতি-হিংসার আবহে এবারের ব্রিগেডে কৃষক ও শ্রমিকদের মতো মেহনতি মানুষদের কথা তুলে ধরাই লক্ষ্য বামেদের ৷ মঞ্চ তৈরি থেকে মাঠ সাজানোর কাজ প্রায় শেষ ৷ আজ সকাল থেকে দলে দলে মানুষ ব্রিগেডমুখী হতে শুরু করেছেন ৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইতিমধ্যেই মিছিল করে সমাবেশের পথে রওনা হয়েছেন কর্মী সমর্থকরা ৷ গোটা কর্মকাণ্ড ও প্রস্তুতি তদারকি করতে শনিবার রাতেও দফায় দফায় ব্রিগেডের মাঠে হাজির হন সিপিএম নেতারা । প্রস্তুতি পর্ব ঘুরে দেখেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম । মৌলালী রামলীলা ময়দান, সিটু রাজ্য দফতর থেকে শুরু করে আশপাশের ছোট হোটেল, ধর্মশালায় বাড়ছে দূরের জেলা থেকে আসা বাম কর্মীদের ভিড় । সরাসরি সিপিএমের ডাকে এই ব্রিগেড না-হলেও এবারের সমাবেশ তাদেরই গণসংগঠনগুলির ডাকে । এবার সিপিএমের গণ সংগঠন সারা ভারত কৃষক সভা, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়ন, সিআইটিইউ ও পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতি এই চার সংগঠনের ডাকে ব্রিগেড সমাবেশ । তাদেরই নেতৃত্ব নিরাপদ সরদার, বন্যা টুডু, অমল হালদার, অনাদি সাহু ও সুখরঞ্জন দে এবার ব্রিগেড সমাবেশের বক্তা । এবার নজিরবিহীন ভাবে দক্ষিণী কায়দায় মঞ্চ তৈরি হয়েছে ব্রিগেড সমাবেশে ৷ ত্রিস্তর মঞ্চ হয়েছে ৷ পুরো মঞ্চটি ৪৮ ফুট চওড়া ও ২৮ ফুট লম্বা ৷ সেটিকে তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়েছে ৷ ব্রিগেড প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল শুক্রবার থেকেই । মঞ্চ বাঁধা থেকে মাইকের খুঁটি সবই সেরে ফেলেন কর্মী ও সমর্থকরা । অন্যদিকে, যাতে কোনও অশান্তি না হয় সেদিকে নজর পুলিশের। কড়া নিরাপত্তা বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সভাস্থলে মোতায়েন থাকবে পর্যাপ্ত পুলিশ। মিছিলে নজরদারি চালাবে পুলিশ। ব্রিগেড সমাবেশে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার ছয়জন আধিকারিক থাকবেন। এসআই ও এএসআই পদমর্যাদার আধিকারিক থাকবেন ১২ জন করে। এছাড়া ৮০ জন পুলিশ কর্মী থাকবেন। মহিলা পুলিশ থাকছে ১৫ জন। ডোরিনা ক্রসিং, মেয়ো রোড, চৌরঙ্গি রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ৭টি পুলিশ পিকেটিং থাকছে। পার্কিংয়ের জন্য ছয়টি জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাখা হচ্ছে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্সও। কয়েকদিন আগে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ মিছিল ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল ভাঙড়। আইএসএফের ডাকা এই প্রতিবাদ মিছিল ঘিরে যে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটবে তা আঁচ করতে পারেনি পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে শহরে মিছিল, মিটিং, সমাবেশ নিয়ে লালবাজার কর্তৃপক্ষ আরও সতর্কতা অবলম্বন করছে। শনিবার বডিগার্ড লাইনে ক্রাইম মিটিংয়ে পুলিশ আধিকারিকদের নগরপাল মনোজ বার্মা বলেন, মিছিল-মিটিং, পথ অবরোধ বা আইন অমান্য-বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কলকাতা পুলিশকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি পুলিশকে আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে বলে নির্দেশ দেন। সূত্রের খবর, বলা হয়েছে যে বিক্ষোভ-অবস্থান, ধর্মঘট ও সমাবেশ সম্পর্কে আগাম তথ্য রাখতে হবে স্থানীয় থানাকে। যদি কোনও এলাকায় বিক্ষোভ করে বা রাস্তা অবরোধ করে তবে পুলিশকে দ্রুত সেখানে পৌঁছাতে হবে এবং সদর দপ্তরকে তা জানাতে হবে। বিক্ষোভস্থলে যেতে আত্মরক্ষায় পুলিশকর্মীদের বডিগিয়ার এবং হেলমেট পরতে হবে।