প্রধানমন্ত্রী মোদির আর্থিক উপদেষ্টা হলেন প্রাক্তন ইডি প্রধান সঞ্জয় কুমার মিশ্র, ‘আনুগত্যের পুরস্কার’, কটাক্ষ বিরোধীদের

প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা  ও পরিষদের স্থায়ী সদস্য হলেন প্রাক্তন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সঞ্জয় কুমার মিশ্র। প্রধানমন্ত্রী নিজেই তাঁকে এই পদ দিয়ে তাঁর আর্থিক পরামর্শদাতা পরিষদের পূর্ণ সময়ের সদস্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন। পিএম-ইএসি (PM-EAC) একটি স্বাধীন সংস্থা, যা অর্থনৈতিক এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিতে সরকারকে, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য গঠন করা হয়। এই পরিষদে সাধারণত বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদদের রাখা হয়। এর বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন অর্থনীতিবিদ সুমন বেরি। ২০২৪ সালের নভেম্বরে এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিবেক দেবরায়ের মৃত্যুর পর সংস্থাটিতে একটি শূন্যপদ দেখা দেয়। সঞ্জয় কুমার মিশ্র একজন ১৯৮৪ ব্যাচের আইএএস অফিসার। তবে অর্থনীতিবিদ হিসেবে তার কোনও খ্যাতি নেই। তাঁকে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে বিরোধীরা খুব স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন তুলেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, তাঁর আমলেই ইডি সনিয়া ও রাহুল গান্ধীকে ইডি-র দফতরে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ থেকে ডি কে শিবকুমার, মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লা, হেমন্ত সোরেনদের বিরুদ্ধে তার পদক্ষেপ নেয়। তাই তার বিনিময়েই অবসরের পরে সঞ্জয় মিশ্রকে নতুন পদে বসানো হল। ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর ইডি-র প্রধান হিসেবে দুই বছরের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিল সঞ্জয় কুমার মিশ্রকে। এজেন্সি প্রধান হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেন। ইডির প্রথম পরিচালক এএম চ্যাটার্জি ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৫ সালের মধ্যে প্রায় সাড়ে সাত বছর বছর ধরে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করেন। কেন্দ্রীয় সরকার মিশ্রকে সচিব পদে উন্নীত করে, যখন তিনি ইডির প্রধান ছিলেন, যা সরকারের নীতি অনুসারে একটি অতিরিক্ত সচিব পদ ছিল। মিশ্র কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাড়াও বিভিন্ন দায়িত্বে আয়কর বিভাগে দায়িত্ব পালন করেছেন। মিশ্রের আমলেই ইডি ভিআইপি চপার মামলার অভিযুক্ত এবং ব্রিটিশ নাগরিক ক্রিশ্চিয়ান মিশেল, আরেকজন প্রধান সন্দেহভাজন রাজীব সাক্সেনাকে ভারতে নির্বাসিত করে, যখন বিজয় মালিয়া, নীরব মোদী এবং সঞ্জয় ভান্ডারির ​​মতো অর্থনৈতিক পলাতকদের বিরুদ্ধে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হয়। এক্স হ্যান্ডেলে সঞ্জয় মিশ্রর এই নিয়োগকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে উদ্ধৃত করে ডেরেকের পোস্ট, ‘প্রয়াত শ্রী অরুণ জেটলির উক্তিটি উদ্ধৃত করা যথার্থ। অরুণ জেটলি বলেছিলেন, বিচারপতিদের ক্ষেত্রে অবসরের পরে চাকরির লোভ অবসরের আগের রায়কে প্রভাবিত করে। ইডির প্রাক্তন ডিরেক্টরের ক্ষেত্রেও সে কথা সত্যি।”

error: Content is protected !!