
একটানা বৃষ্টিতে ফের ধস, উত্তর সিকিমে আটকে প্রায় ১৫০০ পর্যটক
প্রবল বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত সিকিম ও কালিম্পংয়ের একাংশ। টানা বৃষ্টির ফলে ধসের কারণে বিচ্ছিন্ন লাচেন, লাচুং। রবিবার থেকে সেখানে আটকে থাকা পর্যটকদের উদ্ধারকাজে নামার কথা ছিল প্রশাসনের। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়া, টানা বৃষ্টি, ধস ও তিস্তার জলস্তর অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটকদের উদ্ধার করা যায়নি। এমনকী ফিডাং-চুংথাং সড়কটিও ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিকল্প রাস্তা দিয়েও ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি পর্যটকদের। তবে বিকল্প রাস্তা দ্রুত সারাইয়ে কাজ শুরু করেছে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন। সব ঠিক থাকলে সোমবার সকাল থেকে উদ্ধার কাজে নামবে প্রশাসন। লাচেন, লাচুংয়ে সব মিলিয়ে প্রায় 1500-রও বেশি পর্যটক দু’দিন ধরে আটকে রয়েছে উত্তর সিকিমে। অন্যদিকে, সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তার জলস্তর। যে কারণে আগামী দু’দিন সিকিম বাংলা লাইফ লাইন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। আগামী সোম ও মঙ্গলবার 10 নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে সকাল আটটা থেকে সবরকম যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দু’দিন ধরে 130 মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে সিকিম জুড়ে। নষ্ট হয়েছে চুংথাং ও ফিডাংয়ের গুরুত্বপূর্ণ সেতু। এর ফলে মঙ্গন জেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার পুলিশ সুপার সোনম ডেটচু জানিয়েছেন, রবিবার বৃষ্টি এবং ধসের কারণে সেখান থেকে কোনও পর্যটককেই উদ্ধার করা যায়নি। সিকিম সরকারের পক্ষ থেকে আগেই তাঁদের হোটেল এবং হোমস্টেতে থেকে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তর সিকিমের অনেক জায়গাতেই বিদ্যুতের সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রশাসন ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযানে বিঘ্ন ঘটছে। সাঙ্গকেলাং এলাকার একটি সেতুর স্তম্ভ ধসে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। এতে উত্তর সিকিমের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পাশাপাশি আশেপাশের গ্রামগুলিতেও বিপদের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রশাসন থেকে সর্বসাধারণকে সতর্ক থাকতে এবং নদীর ধারে যেতে বারণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। সোম এবং মঙ্গলবার 10 নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, আগামী 2 এবং 3 জুন বন্ধ থাকছে জাতীয় সড়ক। বর্ষার মরসুমে জাতীয় সড়কের বেশ কিছু জায়গায় মেরামতির প্রয়োজন হয়েছে। সুলতানেখোলা, লিখুভিড় ও মেল্লির কাছে মেরামতির কারণে সোম এবং মঙ্গলবার জাতীয় সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।