৭ উইকেটে জয়ী গুজরাত টাইটান্স

 দুরন্ত জয় পেল গুজরাত টাইটান্স, ২০ বল বাকি থাকতেই জিতল সাত উইকেটে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে হারিয়ে তাঁরা পয়েন্ট তালিকায় আরও লাফ দিল। আর সানরাইজার্স দল এই টানা চতুর্থ হারের মুখ দেখল। চার ম্যাচ খেলে মাত্র ১টি ম্যাচে জিতেছিল প্যাট কামিন্সের দল। এই ম্যাচেও তাঁরা ফের একবার হারের মুখ দেখল, আর সেটা নিজেদের ঘরের মাঠেই, যা আরও দুঃখের বিষয়। আইপিএল ২০২৫ শুরুর আগে থেকেই মনে করা হচ্ছিল এবারে বুঝি তাণ্ডব লিলা দেখাবেন ট্র্যাভিস হেড, হেনরিখ ক্লাসেন, অভিষেক শর্মারা। কিন্তু কোথায় কি? মহম্মদ সিরাজের বোলিং দাপটে খরকুটোর মতোই যেন উড়ে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দল। সিরাজ একাই নিলেন চার উইকেট, তাতেই চাপ বাড়ল এসআরএইচ দলের। যা পরিস্থিতি, তাতে এখান থেকে নিজামের শহরের দলের প্লে অফে ওঠাই যেন কঠিন হয়ে দাঁড়াল। টস জিতেছিলেন গুজরাত টাইটান্সের অধিনায়ক শুভমন গিল। তিনি প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান সানরাইজার্সকে। আরও একবার ব্যর্থ হন ট্র্যাভিস হেড, তিনি সিরাজের বলে মাত্র ৮ রানেই সাজঘরে ফিরেছিলেন। পাওয়ারপ্লের মধ্যে অভিষেক শর্মা, ইশান কিষান দুজনেই অতিরিক্ত সতর্কভাবে ব্যাটিং করতে গেলেন, তাতেই তাঁদের খেলার মান আরও কমল। ১৬ বলে ১৮ রান করে সিরাজের বলেই আউট হন অভিষেক শর্মা, ১৪ বলে ১৭ রান করে আউট হলেন ইশান কিষান। তিনি প্রসিধ কৃষ্ণার বোলিংয়ে আউট হন। নীতীশ কুমার রেড্ডিকেও আইপিএলের নিলামের আগে অনেক ভরসা করেই নিজামের শহরের দল রিটেন করেছিল, কিন্তু তিনি এদিন গুজরাতের বিরুদ্ধে করলেন ৩৪ বলে মাত্র ৩১ রান, মানে ওডিআইতেও অনেকে এর থেকে দ্রুত গতির ব্যাটিং করেন। কিন্তু সাই কিশোরের স্পিনের সামনে তিনি শেষ পর্যন্ত নতি স্বীকার করলেন, এরপর ক্লাসেন এসে খেলা দেখানো শুরু করেছিলেন বটে। তবে তাঁকেও সাই কিশোর বোল্ড আউট করে সাজঘরে ফেরালেন। মহম্মদ সিরাজ এরপর আউট করেন অনিকেত বর্মা এবং সিমারজিত সিংকে। তাতেই সিরাজের চার ওভার শেষে পরিসংখ্যান দাঁড়ায় মাত্র ১৭ রানে চার উইকেট। এর আগে সিরাজ আরসিবির বিরুদ্ধে দুরন্ত বোলিং করেছিলেন, কিন্তু এদিন যেন সেই ম্যাচের পরিসংখ্যানকেও ছাপিয়ে গেলেন এই পেসার। শেষ দিকে কামিন্স যদি অধিনায়কোচিত ৯ বলে ২২ রান না করতেন, তাহলে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে হায়দরাবাদের রান ১৫২ পৌঁছাতে না। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য শামি-কামিন্স জুটি পরপর ধাক্কা দিয়েছিল টাইটান্সদের। সুদর্শকে পাঁচ রানে ফেরান শামি, এরপর তাঁদের সব থেকে ভয়ঙ্কর ব্যাটার জোস বাটলারকে এদিন খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরান অজি অধিনায়ক কামিন্স। ইংরেজ প্রতিপক্ষকে দেখেই যেন জ্বলে ওঠেন প্যাট। যদিও এরপর কোনও ঝুঁকি না নিয়েই গিল এবং ওয়াসিংটন সুন্দর রান এগিয়ে নিয়ে গেলেন। এখানেই আশিস নেহেরা মাস্টারস্ট্রোক দিয়ে সুন্দরকে নামিয়ে দেন। ওয়াসিংটন সুন্দর সেই ভরসার দামও দিলেন ভালোভাবেই। গুজরাত টাইটান্সের জার্সিতে নিজের অভিষেক ম্যাচে বোলিংয়ের সুযোগ না পেলেও ব্যাট হাতে তিনি নজর কাড়লেন। ২৯ বলে ৪৯ রান করেন। শামির বলে আউট হওয়ার আগে মারেন ২টি ছয় এবং পাঁচটি চার। এরপর শেরফান রাদার্ফোর্ড নেমে বেধরক পেটাতে শুরু করেন। শুভমন গিল অর্ধশতরান করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন। জিশান আনসারিকে চার মেরে ৩৬ বলে নিজের অর্ধশতরান করেন গিল। শেষ পর্যন্ত ৪৩ বলে ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন গিল। শেরফান রাদার্ফোর্ড ১৬ বলে ৩৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। মারেন ৬টি চার এবং ১টি ছয়। ২০ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় গুজরাত টাইটান্স। এই জয়ের ফলে গুজরাট পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল ৪ ম্যাচে তিনটিতেই জয় তুলে নিয়ে।

error: Content is protected !!