উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য কড়া নিরাপত্তা, জারি ২০ দফা নির্দেশিকা

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নির্দেশ সম্বলিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল সোমবার। প্রাথমিকের টেটের পর এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও মেটাল ডিটেক্টর-এর মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি করা হবে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যজুড়ে স্পর্শকাতর পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে মেটাল ডিটেক্টর-এর মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি করা হবে। সেই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হল সংসদের পক্ষ থেকে৷ এই প্রথম উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেটাল ডিটেক্টর-এর মাধ্যমে তল্লাশি করার নজিরবিহীন পদক্ষেপ সংসদের। মূলত ছাত্রছাত্রীরা ইলেকট্রনিক গেজেট নিয়ে প্রবেশ করছে নাকি তা নিশ্চিত করতেই মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। পাশাপাশি, পরীক্ষা চলাকালীন কোন পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুর ঘটনা ঘটলে সেই স্কুলের অনুমোদন বাতিল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ২০ দফা গাইডলাইন পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে দিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে দেখে নেওয়া যাক

১) প্রশ্ন পত্রের সুরক্ষার জন্য প্রতি মেন ভেনুতে ২ জন কাউন্সিল নমিনি এবং সাব ভেনুতে ১ জন কাউন্সিল  নমিনি থাকবেন। 
২) মোবাইল নিয়ে প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের  মেন গেটে পুলিশি নজরদারির থাকবে। ভেনু সুপারভাইজার, সেন্টার ইনচার্জ এবং সেন্টার সে ছাড়া কেউ মোবাইল নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। 
৩) মোবাইল নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ আটকাতে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার সময় পড়ুয়াদের সতর্ক করে দিতে হবে স্কুলগুলিকে। 
৪) পরীক্ষা শুরুর পর কোনও শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর পরীক্ষার হল থেকে বাইরে যাওয়া কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
৫) সংসদ ইতিমধ্যে সারা রাজ্যে প্রায় ২৩৫টি পরীক্ষা কেন্দ্রকে স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এইসব পরীক্ষাকেন্দ্রে Electronics Gadget Checking-এর ব্যবস্থা  থাকবে।
৬) প্রতি পরীক্ষা কেন্দ্রে ২ জন করে ইনভিজিলেটর থাকবেন। মোবাইল নেই নিশ্চিত হওয়ার পরই তাঁরা প্রশ্নপত্র বিতরণ করবেন। এই নজরদারিতে কোনও গাফিলতির অভিযোগ উঠলে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছে। পড়ুয়ারা যাতে কোনও অসৎ উপায় অবলম্বন না করে তার জন্য কড়া নজরদারি থাকবে। ইনভিজিলেটরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এলে পদক্ষেপ করা হবে।
৭) যে বিষয়ে  পরীক্ষা  সেই বিষয়ের শিক্ষক সেদিন সেই কক্ষে ডিউটি করতে পারবে না।   
৮) ভেনু সুপারভাইজারদে আই ডি কার্ড দেওয়া হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নের সার্বিক সুরক্ষার দায়িত্ব তাঁদের।  
৯) কোনও পরীক্ষাকেন্দ্রে যদি  টোকাটুকি, ভাঙচুর, বা বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠলে সেই স্কুলের ফলাফল স্থগিত রাখা হবে। এবং স্কুলের স্বীকৃতি বাতিলও হতে পারে।
১০) পরীক্ষার দিনগুলিতে  ভেন্যু সুপারভাইজার  নিজের দায়িত্বে প্রশ্নপত্র সুরক্ষিত রাখবেন।  প্রশ্নপত্র খোলার সময় একজন কাউন্সিল নমিনি ও পুলিশের  উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।

১১) পরীক্ষার প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সব ভেনুতে কাউন্সিল নমিনি উপস্থিত থাকবেন। তিনি সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার কাজ তদারকি করবেন। 
১২) কক্ষে মোবাইল পাওয়া গেলে ওই  পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হবে।  
১৩) ভেনু সুপারভাইজারদের জন্য Examination Confidential Format দেওয়া হবে। কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটলে ওই ফরম্যাটে তার উল্লেখ করতে হবে। 
 ১৪) পরীক্ষা শুরুর পর ১ঘন্টা পর্যন্ত কাউকে টয়লেটে  যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না।  এবং ১২.৪৫ এর আগে কোনো পরীক্ষার্থী হল থেকে বেরতে পারবে না। 
১৫) পরীক্ষার দিনগুলিতে ভেনু সুপারভাইজারদের কক্ষে  প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হবে।  
১৬) প্রতিটি ভেনু সুপারভাইজারের কাছে একটি  Question Distribution Format পাঠানো হয়েছে। তিনি প্রথমে সিল খুলে প্রশ্নপত্র পৃথক খামে আবার সিল করে তা পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠাবে।  
১৭) ৫টি নির্দিষ্ট কারণের যে কোন একটি কারণ ঘটলে আর এ করার জন্য প্রতিটি ভেনু সুপারভাইজারকে RA Format সহ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণগুলি হল- ১) মোবাইল নিয়ে ভেনু তে প্রবেশ, ২) টোকাটুকি বা অসৎ উপায় অবলম্বন করলে, ৩)  শিক্ষক- শিক্ষিকা নিগ্রহ, ৪) বিদ্যালয়ের সম্পত্তি নষ্ট করলে, ৫) উত্তরপত্র ছিঁড়ে ফেলা, লুকিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া, উত্তরপত্রে কোন অশালীন শব্দ ব্যবহার করা, উত্তরপত্রে কোন অনৈতিক কাজের বিষয় থাকলে। 
১৮) কোনও ভেনুতে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সেই  ভেনু সুপারভাইজার  দায়ী থাকবেন। 
১৯) প্রশ্নপত্র ও লিখিত উত্তরপত্র আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
২০) সংসদ ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশাবলী পাঠিয়ে দিয়েছে। সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে সকলকে।