পরকীয়ায় জড়িয়ে হত্যার ছক স্ত্রীর! জানতে পেরে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ করলেন স্বামী

স্ত্রী পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছেন ৷ এই সন্দেহে তাঁকে শ্বাসরোধ করে ‘খুন’ করার পর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ যুবকের ৷ পাশাপাশি তাঁর দাবি, প্রেমিকের সঙ্গে পরিকল্পনা করে স্ত্রী তাঁকেই খুনের ছক কষেছিলেন ৷ পরিকল্পনা আগাম জেনে ফেলায় স্ত্রীকে খুন করেন ৷ ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার গভীর রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার মাহিনগরে। মৃতের নাম প্রিয়াঙ্কা গায়েন (২৮) ৷ দেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি অভিযুক্ত স্বামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ৷ ধৃতের নাম বাপি গায়েন (৩১)। এ বিষয় বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার রূপান্তর সেনগুপ্ত বলেন, “ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ।” স্থানীয়দের তরফে জানা গিয়েছে, ক্যানিংয়ের হেরোভাঙা এলাকার বাসিন্দা বাপি গায়েন বছর আটেক আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন প্রতিবেশী প্রিয়াঙ্কাকে । বিয়ের পর বাপি পার্ক সার্কাসের একটি কারখানায় চাকরি পান । তারপর স্ত্রীকে নিয়ে সোনারপুরের মাহিনগরে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। পাশের ঘরেই সুপ্রকাশ দাস নামে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন । বাপি পুলিশকে জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুপ্রকাশের ৷ বিষয়টি জানতে পেরে অশান্তি শুরু হয় বাপি-প্রিয়াঙ্কার সংসারে। এরই মধ্যে স্ত্রীকে নিয়ে অন্যত্র চলে যান সুপ্রকাশ । তবুও তাঁর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক চালিয়ে গিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা । দু’জনে স্থানীয় ধানমাঠ এলাকার একটি ভাড়াবাড়িতে একসঙ্গে সময় কাটাতেন বলেও বাপি জানান। স্বামীর অভিযোগ, তাঁকে খুনের পরিকল্পনা করছিলেন প্রিয়াঙ্কা ও সুপ্রকাশ । সেই কথা ফোনে বলার সময় শুনে ফেলেন বাপি । তারপর নিজের জীবন বাঁচাতে এবং প্রতিশোধ নিতে সিদ্ধান্ত নেন স্ত্রীকে খুন করার । সেই অনুযায়ী সোমবার রাতে স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়তেই তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বাপি ! প্রিয়াঙ্কাকে খুনের পর নিজের অপরাধ স্বীকার করে সোজা সোনারপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি । পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে । অভিযুক্ত বাপিকে জেরা করে ঘটনার সম্পূর্ণ তথ্য জানার চেষ্টা চলছে । ভাড়া বাড়ির মালিক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাপি আর প্রিয়াঙ্কার মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত । তবে এমন ঘটনা যে ঘটবে তা কেউ কল্পনাও করেননি। ওদের একটি ছ’বছরের সন্তান রয়েছে ৷ বাচ্চাকে নিয়ে সকালবেলা বাপি বেরিয়ে যায়। এরপর আমরা থানায় খবর দিই ৷ ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে । শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে প্রিয়াঙ্কাকে ।” এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মানস হালদার বলেন, “বাড়ির মালিক আমাদেরকে সকালে খবর দেয়, বাড়ির মধ্যে এক মহিলা মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ৷ আমরা তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে খবর দিই ৷ ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে । তার আগে 6 বছরের বাচ্চাকে নিয়ে বেড়িয়ে যায় বাপি ।” তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরকীয়া থেকেই এই নারকীয় পরিণতি । সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে সোনারপুর থানার পুলিশ।

error: Content is protected !!