সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা রাজস্থানের মহিলা চিকিৎসকের, গ্রেফতার বিজেপি নেতা
“আমার মৃত্যুই প্রমাণ করবে যে আমি নির্দোষ ৷ দয়া করে নিরপরাধ চিকিৎসকদের হয়রান করবেন না”, সুইসাইড নোটে এমনটাই লিখে গিয়েছেন চিকিৎসক অর্চনা শর্মা ৷ মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি ৷ তাঁর মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে ৷ এই ঘটনায় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র গোঠবালকে গ্রেফতার করেছে রাজস্থানের পুলিশ ৷ গত ২৮ মার্চ ওই হাসপাতালে একজন গর্ভবতী মহিলার প্রসবকালীন অস্ত্রোপচারের সময় মৃত্যু হয় ৷ তাঁর মৃত্যুতে পরিবারের লোকজন হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ আনে ৷ ওই দিনই বিকেলে লালসোট থানায় চিকিৎসক অর্চনা শর্মার বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির 302 ধারায় খুনের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয় ৷ এতে মানসিক চাপে ছিলেন চিকিৎসক ৷ এর মধ্যে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র গোঠবাল ডাঃ শর্মার হাসপাতালে মৃত গর্ভবতী মহিলার পরিবারের সঙ্গে ধর্নায় বসেন ৷ পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি তোলেন ৷ এই ঘটনায় আতঙ্কিত চিকিৎসক অর্চনা শর্মা অবসাদে চলে যান ৷ শেষমেশ এ থেকে বেরবার কোনও উপায় না পেয়ে নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন ডাঃ অর্চনা ৷ মৃত্যুর চরম মুহূর্তে লেখা ওই নোটে তিনি উল্লেখ করেছেন, তাঁর স্বামী এবং সন্তানদের যেন কোনও ভাবে হয়রান করা না হয় ৷ পাশাপাশি নিরপরাধ চিকিৎসকদের কথাও জানিয়েছেন ৷ তিনি লিখেছেন, “আমি আমার স্বামী আর বাচ্চাদের খুব ভালবাসি ৷ দয়া করে আমার মৃত্যুর পর তাদের কোনওভাবে হেনস্থা করবেন না ৷ আমি কোনও ভুল করিনি, কাউকে হত্যা করিনি ৷ পিপিএইচ একটা জটিলতা ৷ এর জন্য চিকিৎসকদের টানাহেঁচড়া করা বন্ধ করুন ৷ আমার মৃত্যুই হয়তো আমায় নির্দোষ প্রমাণ করবে…৷” স্বামীকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, “তোমাকে ভালবাসি ৷ আমার বাচ্চারা যেন তাদের মায়ের অভাব বোধ না করে ৷” জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক চাপে পড়ে লালসোট পুলিশ চিকিৎসক অর্চনার বিরুদ্ধে 302 ধারায় খুনের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছিল ৷ বুধবার এ নিয়ে তোলপাড় হয় রাজস্থান রাজনীতি ৷ সাসপেন্ড করা হয় লালসোট থানার ওসি অঙ্কিত চৌধুরীকে ৷ এমনকি রাজস্থানের গেহলট সরকার ডাঃ অর্চনা শর্মার মামলাটি ঠিকমতো সামলাতে না পারার দায়ে দৌসার এসপিকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ৷