
নেতাজি ইনডোরে দলীয় কর্মীদের ক্লাস নিলেন মমতা, বেঁধে দিলেন ২০২৬-এর টার্গেট
বাংলায় তৃণমূল সরকার হ্যাটট্রিক করেছে ইতিমধ্যে। তিনবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে মমতা। এই মুহূর্তে টার্গেট আরও একদফা ভোটে জয়। তার প্রস্তুতি যে দল শুরু করে দিয়েছে, বৃহস্পতিবারের সভা তারই প্রমাণ। দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি, নেতাজি ইনডোরে দলীয় কর্মীদের বৈঠকে স্পষ্ট করলেন, আগামী দিনে ভোটের আগে দল ঠিক কীভাবে কাজ করবে। কোন কাজে থাকবে প্রাধান্য। কোন পন্থায় হবে কাজ। তার জন্য গঠন করে দিলেন কমিটি। বাংলায় তৃণমূল সরকার হ্যাটট্রিক করেছে ইতিমধ্যে। তিনবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে মমতা। এই মুহূর্তে টার্গেট আরও একদফা ভোটে জয়। তার প্রস্তুতি যে দল শুরু করে দিয়েছে, বৃহস্পতিবারের সভা তারই প্রমাণ। দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি, নেতাজি ইনডোরে দলীয় কর্মীদের বৈঠকে স্পষ্ট করলেন, আগামী দিনে ভোটের আগে দল ঠিক কীভাবে কাজ করবে। কোন কাজে থাকবে প্রাধান্য। কোন পন্থায় হবে কাজ। তার জন্য গঠন করে দিলেন কমিটি। বুঝিয়ে দিলেন, নির্বাচনের আগে, এই সময়কালে মানতে হবে দলনেত্রীর কড়া অনুশাসন, সতর্ক করলেন একাধিক বিষয়ে। মনে করালেন, এই বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি বজায় রাখতে হবে যে কোনও মূল্যে। প্রয়োজনে বাংলায় আনতে হবে আবার জাগরণ। নেতাজি ইনডোরে সর্বস্তরের কর্মীদের সামনে বৃহস্পতিবার ঠিক কী কী বার্তা দেন, সেদিকে নজর ছিল সব পক্ষের।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি কি বললেন –
• কানাঘুষো ছিল, আইপ্যাক নিয়ে দলের মধ্যে অসন্তোষ। ভোটের আগে ভোটকৌশলী দল নিয়ে বার্তা দিলেন মমতা। বললেন পিকে-র আইপ্যাক এটা নয়। এটা নতুন টিম। এদের সঙ্গে কাজ করতে হবে, কাজে সহযোগিতা করতে হবে। এই দলের নামে অযথা উলটোপালটা কথা বলা যাবে না। অর্থাৎ সতর্ক করলেন বেফাঁস নেতাদের।
• ভোটের আগে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করতে হবে ভোটার লিস্ট নিয়ে। সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে পাতার পর পাতা প্রমাণ তুলে ধরে জানালেন, বিরাট গোলমাল ভোটার লিস্টে। এর আগেও ভোটার লিস্টে কারচুপি নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। এদিনের সভা থেকে সর্বস্তরের কর্মীদের সামনে প্রমাণ দেখিয়ে বোঝালেন কারচুপির ঘটনা ঘটেছে ঠিক কীভাবে। তৃণমূল কংগ্রেস দলনেত্রীর দাবি, বাংলায় এজেন্সি পাঠিয়ে ভোটার তালিকায় কারচুপি করার চেষ্টা চলেছে, আর এই ঘটনায় তাঁর নিশানায় গেরুয়া শিবির। নাম পড়ে পড়ে বোঝালেন, কীভাবে পঞ্জাব-হরিয়ানার বহু মানুষের নাম নাম বাংলার জেলায় জেলায় ভোটার তালিকায় ঢোকানো হয়েছে। দিল্লি থেকেই এসব হয়েছে বলে দাবি মমতার।
• মমতা বললেন, ভোটের সবরকমের প্রস্তুতির শুরু এবার ভোটার তালিকা থেকেই। ২০২৬ সালে আবার খেলা হবে। আর সেই জোর খেলার শুরু করতে ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনির মধ্যে দিয়ে। আধার কার্ড কেলেঙ্কারি হয়েছে, দাবি মমতার।
• তৃণমূলের দলনেত্রী বললেন, ‘মাথায় রাখবেন এটা বাংলা দখল করার খেলা। বহিরাগতদের বাংলা দখল করতে দেবেন না।‘ বৃহস্পতির বৈঠক থেকেই সমস্যার সমাধানের পথ বাতলে দিলেন মমতা। কীভাবে এই কারচুপির বিরুদ্ধে কাজ করবে দল? কাজ করতে হবে বুথের কর্মীদের। সরেজমিনে কাজ করতে হবে জোরকদমে। জেলায় জেলায় তৈরি হবে কোর কমিটি। কমিটি কাজ করবে ভোটার তালিকা নিয়ে। তিনদিন পর পর তথ্য দিতে হবে তৃণমূল ভবনে।
• কমিটি গড়ে দিলেন সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বে। ওই কমিটিতে থাকবেন সুব্রত বক্সী, অভিষেক ব্যানার্জি, কল্যাণ ব্যানার্জি, সুজিত বসু, ডেরেক ও’ ব্রায়েন, উদয়ন গুহ, বিপ্লব মিত্র, অর্পিতা ঘোষ, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, মমতাবালা ঠাকুর, মলয় ঘটক, পার্থ ভৌমিক, ফিরহাদ হাকিম, মালা রায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, দেবাংশু ভট্টাচার্য, তৃণঙ্কুর ভট্টাচার্য, বাপি হালদার-সহ আরও বেশকয়েকজন। এই কমিটির সদস্যরা প্রতিদিন চারজন করে তৃণমূল ভবনে বসবেন প্রতিদিন। জেলার তথ্য শুনে, সমাধান করবেন তাঁরা। তাঁরা না পারলে, বলতে হবে খোদ মমতাকে।
• দলীয় কর্মী, কাউন্সিলর, জেলা সভাপতি থেকে সর্বস্তরের কর্মী, যাঁরা কাজে ফাঁকি দেন বলে খবর, এদিন তাঁদের সতর্ক করেন দলনেত্রী। সাফ বললেন, ‘মানুষ কাকে ভাল বলছে, কাকে খারাপ বলছে সব খবর রাখি।‘ ভাল কাজের গুরুত্ব রয়েছে দলে, বুঝিয়ে দিলেন তাও। পদে থেকে কাজ করতে হবে মানুষের জন্য। অন্যথায় হারাতে পারেন পদও, ভোটের আগে সতর্ক করলেন সেই বিষয়েও।
• মমতা বললেন, ‘এই ভোট বিজেপি সিপিএম-এর জামানত জব্দ করার ভোট।‘ দলীয় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। সংগঠন আরও শক্তিশালী করতে হবে। এলাকায় কে আসছে, না আসছে নজর রাখতে হবে দলীয় কর্মীদের। এলাকায় যাতে কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, নজর রাখতে হবে সেদিকে, দলনেত্রী