‘আগে ক্ষমা চান, তারপর ভোট চাইবেন’, যোগীকে আক্রমণ মমতার
হাথরাস ও উন্নাও গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার লখনউতে মুলায়ম-পুত্র অখিলেশের সমর্থনে আয়োজিত এক জনসভায় তৃণমূল সুপ্রিমো সাফ জানিয়ে দিলেন, এই দুই ঘটনার জন্য বিজেপির নিঃশর্তে ক্ষমা চাইতে হবে। তারপর তারা ভোটের জন্য জনতার দরবার ভিক্ষা করতে যেতে পারে। মমতার মতে, ওই দুই ঘটনার জন্য বিজেপি ক্ষমা প্রার্থনা না চেয়ে ভোটভিক্ষার নৈতিক অধিকার নেই। উন্নান এবং হাথরাসের ঘটনা যে যোগী রাজ্যের কাছে এবারের ভোটে অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিকমহলের একাংশ। অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে লখিমপুরের ঘটনা। ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ছেলের নাম। ওই ঘটনার প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ইস্তফার জোরাল দাবি উঠলেও দিল্লি থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইস্তফা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। রাজ্য সরকার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু বিরোধীদের রণকৌশলে তাদের সেই চেষ্টা ভেস্তে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সরকার রীতিমতো বেকায়দায়। এবার ভোটের মুখে ওই দুই বর্বরোচিত ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিকমহলের মতে, মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনা নিয়ে সরব হওয়ায় বিষয়টি বাড়তি মাত্রা পেল। মুখ্যমন্ত্রী সেই সঙ্গে বলেন, বিজেপিকে উত্তরপ্রদেশ থেকে হঠাতেই তিনি অখিলেশের সমর্থনে প্রচারে এসেছেন।
তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, বিজেপিকে হারাতে হবে এটাই আমার বার্তা, জোট বেঁধে অখিলেশকে ভোট দিন, সমাজবাদী পার্টিকে ভোট দিন। এর পাশাপাশি এদিনের ভার্চুয়াল জনসভায় মমতা নাম না করে বিঁধেছেন মিমি প্রধান ওয়েসিকে। মমতার নিশানায় এদিন ছিলেন রাহুল গান্ধি ও প্রিয়াঙ্কা। যদিও কারোর নাম মুখে আনেন নি তৃণমূল নেত্রী। ওয়েসিকে বসন্তের কোকিল ও রাহুল-প্রিয়াঙ্কাকে কোয়েল-দোয়েল বলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। গোবলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে। সেই রাজ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর ও সমাজের মানুষের বসবাস। তাই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যোগী রাজ্যে প্রার্থী দেওয়ায় ক্ষতি হবে সপার। তাই নাম না করেই ওয়েসি ও কংগ্রেসের দুই নেতৃত্বকে বিঁধেছেন মমতা। নেত্রী বলেছেন, ‘অখিলেশজি ৩৬৫ দিন উত্তরপ্রদেশের মানুষের সঙ্গে থাকেন। তাঁকে ভোট দিন। উনি আপনার পাশে থাকবেন। ভোট ভাগাভাগি করলে বিজেপির লাভ হবে। আমি বিশ্বাস করি এবারের নির্বাচনে ভোট ভাগাভাগি হবে না। দুটো রাজনৈতিক দল আছে যারা ভোট ভাগাভাগি করে বিজেপির লাভ করে। পাঁচবছর দেখতে পাওয়া যায় না, কিন্তু যখন ভোট আসে তখন দেখতে পাওয়া যায়। এরা বসন্তের কোকিল। একজন কোয়েল অন্যজন দোয়েল। আবার ভোট মিটে গিলে একজন দিল্লি আর একজন হায়দরাবাদে বসে থাকে।’ নেত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘সারা বছর এঁদের কোথাও দেখা যায় না। মানুষের পাশে থাকতে দেখা যায় না। কিন্তু ভোট এলেই কিছু মানুষ বসন্তের কোকিলের মতো এসে পড়েন। এঁদের ভাল করে চিনে নিন। এঁদের একটি ভোটও দেবেন না। কারণ এঁদের ভোট দেওয়ার অর্থ বিজেপি-র হাত শক্ত করা।’