পুরুলিয়াকে পর্যটন, ফিল্মসিটি, শিল্পপার্ক দিয়ে সাজাতে চান মুখ্যমন্ত্রী
রাজ্যের পশ্চিমপ্রান্তের জেলা পুরুলিয়া দীর্ঘদিন ধরেই বঞ্চিত থেকেছে উন্নয়ন থেকে। বিশেষ করে বাম জমানায়। ২০১১ সালে পরিবর্তনের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে এই জেলা ফের উন্নয়নের মুখ দেখেছে। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া জেলায় বিজেপি ভাল ফল করলেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে মমতার সরকার। কিন্তু তারপরেও চলতি জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এসেছে দীর্ঘদিন ধরেই জেলার একের পর এক প্রকল্পের কাজ বকেয়া হয়ে পড়ে রয়েছে। তা নিয়ে সোমবার জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী জেলা ছাড়ার আগে প্রকাশ্যে কর্মীসভায় যোগ দেন। সেখান থেকেই এদিন তিনি বার্তা দেন পুরুলিয়াকে শিল্পের সম্ভারে সাজিয়ে তোলার। জানান, অযোধ্যা পাহাড়ের দেশে হবে ফিল্মসিটি, হবে শিল্পপার্ক। জোর দেওয়া হবে পর্যটন শিল্পে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, পুরুলিয়ায় তৈরি হতে চলেছে ফিল্ম সিটি। মানে ‘সিনেমা শহর’। দক্ষিণ ভারতের হায়দ্রাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটির আদলে সেই শহর গড়ে তোলা হবে। পুরুলিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে এই ফিল্মসিটি তৈরি করা হবে। পাহাড় ও নদী ঘেঁষা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা সরকারি জমিতেই ওই ফিল্মসিটি তৈরি করা হবে বলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। ওই ফিল্মসিটি তৈরি হলে তা যেমন পর্যটকদের কাছে একটা বড় আকর্ষণ হয়ে উঠবে তেমনি পুরুলিয়া জেলায় সিনেমার শ্যুটিংয়ের সংখ্যা বাড়বে। জেলার অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে। যে জায়গায় পাহাড়, জঙ্গল রয়েছে, সেখানে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ১০ একর জমি দেওয়া হবে। সেখানেই ওই ফিল্মসিটি তৈরি করা হবে। প্রাথমিক পছন্দের জায়গা হিসাবে গড় পঞ্চকোটের নামও উঠে এসেছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন পর্যটন শিল্পের আরও সম্প্রসারণের কথাও জানান। বলেন, পাকবিড়রার জৈন মন্দির সংস্কার করার জন্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরকে ১ কোটি ও পর্যটন দফতরকে ১ কোটি টাকা কথা বলেছি। জেলার বিভিন্ন জায়গার পর্যটন কেন্দ্র মিলিয়ে ট্যুরিজম সার্কিট গড়ে তোলার কথাও বলেছি কালকের বৈঠকে। পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে আরও হোম স্টে বাড়াতে হবে। জেলার মাটির সৃষ্টির কেন্দ্রগুলিতে কুঁড়ে ঘরের আদলে কটেজ তৈরি করতে হবে। সেখানে ওই কটেজকে কেন্দ্র করে বাজারও গড়ে উঠবে। এ ছাড়াও রঘুনাথপুরে ৭২ হাজার কোটি টাকার শিল্প গড়ে উঠবে। রঘুনাথপুরে প্রচুর বিনিয়োগ আসবে। বিনিয়োগকারীদের সেখানে যাতে কোনওরকম সমস্যা না হয় বা কেউ তাঁদের অসুবিধা না করেন, তা দেখতে হবে। রঘুনাথপুর থানার পুলিস ও প্রশাসনকেও এবিষয়ে নজর রাখতে হবে। থানার ওসি, আইসিদের গ্রামে গ্রামে জনসংযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় নাকাচেকিং আরও বাড়াতে হবে।