‘মাঠের দখল নিতে এসেছি’, ব্রিগেড থেকে তৃণমূল এবং বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ মীনাক্ষীর

ব্রিগেডের ইনসাফ সমাবেশ থেকে রাজনীতির ময়দান দখলের চ্যালেঞ্জ জানালেন ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ৷ বুঝিয়ে দিলেন যে, বামেদের পাখির চোখ ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন ৷ ব্রিগেডের সমাবেশে দুর্নীতি ও ধর্মীয় ভেদাভেদ প্রশ্নে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপিকে একহাত নিয়ে মীনাক্ষী বলেন, বামপন্থীরা রক্তবীজের ঝাড়, লড়ে যাবে ৷ যেই মাঠে খেলা হবে বলেছিল, সেই মাঠের দখল নিতে এসেছি ৷ এ দিন তাঁর বক্তব্যের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁর নিশানা থেকে বাদ যায়নি কেউই ৷ শাসকদল তৃণমূলকে একহাত নিয়ে মীনাক্ষী বলেন, এক টাকা চার আনার মস্তানরা ঘুরে বেড়াচ্ছে তৃণমূলে ৷ আর বিজেপির জন্য তাঁর অগ্নিবাণ, কে বিজেপি ! নতুন বোতলে পুরনো মদ ৷ সব ভাগাড়েরগুলো গিয়েছে ৷ এরা রেল, নদী-নালা সব বেচে দিচ্ছে ৷ মীনাক্ষীর দাবি, শুধু হাঙ্গামা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয় ৷ আমাদের আসল কাজ হল গোটা সিস্টেম বদল করার ৷ ছোট থেকে এসেছি, বাবার হাত ধরে ব্রিগেডে ৷ এটা শিখিনি যে চুরি করতে হবে ৷ এটা শিখেছি যে, পাশের জনের হাত ধরতে হবে, আর এগিয়ে যেতে হবে ৷ এ দিন বিজেপি ও তৃণমূলের যোগসাজশের অভিযোগ করেছেন মীনাক্ষী ৷ তিনি শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করলেও বলেন, বিরোধী দলনেতা বলে নিজেকে যিনি বলছেন তাঁকে বলছি, আপনাদের নিজেদের বিধায়করা বিধানসভার ভেতরে বিজেপি, আর বাইরে দিদিমণির কোলে দোল খাচ্ছে ৷ তাঁদের বিধায়ক পদ বাতিলের জন্য স্পিকারের কাছে আবেদন করুন ৷ তাহলেই হাওয়া টাইট হয়ে যাবে ৷ মীনাক্ষীর

কথায়, কোন অকাট মুর্খরা বলে যে বামেরা শূন্য ৷ আসলে ওরা বামপন্থীদের শক্তিকে ভয় পায় ৷ তাঁদের চোখ যে লোকসভা নির্বাচনে, ব্রিগেডের ময়দান থেকে এ দিন সেই বার্তা দিয়েছেন ডিওয়াইএফআই নেত্রী ৷ তিনি বলেন, মহম্মদ সেলিম, বাসুদেব আচারিয়ারা যখন লোকসভায় ছিলেন, তখন আমাদের ঘরের টাকা, ১০০ দিনের কাজের টাকা লুট করার সাহস হত না । অনেক আশা নিয়ে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিলেন, আকাশ থেকে নেমে কোনও ফরিস্তা ভালো করবে । সব বদলে দেবে ৷ কিন্তু বেঁচে থাকতে চাইলে লড়াইয়ে আসুন । কে যাবে ২০২৪ সালে সংসদে ? যারা রোজগারের জায়গাকে ধরে রাখতে চাইছে, যারা রুটিরুজির কথা বলছে, তাঁদেরই লোকসভায় পাঠাতে হবে ৷ বামপন্থীরাই বাঘের বাচ্চা ৷ মীনাক্ষীর কথায়, যেই মাঠে খেলা হবে বলেছিল, সেই মাঠের দখল নিতে এসেছি ৷ যে মাঠে লড়াইয়ের শর্ত ধর্ম বা ভাষা নয় ৷ দেশের নাম ভারত নাকি ইন্ডিয়া এটা লড়াইয়ের এজেন্ডা নয় ৷ লড়াইয়ের শর্ত হবে কাজ, রুটি, স্বচ্ছতা ৷ সেই শর্তেই গোটা মাঠের দখল নেবে মূল এজেন্ডার কারিগররা ৷ তাই নকল যুদ্ধ ছাড়ো ৷ ধর্ম কাদের থেকে শিখব ৷ ধর্ম মানুষের ধর্ম ৷ সবাইকে লড়াইয়ের মাটিতে আনতে হবে ৷ ইনসাফের লড়াই অবিরাম, ধারাবাহিক, দীর্ঘ ৷ এ দিন গণমাধ্যমের প্রতিও ক্ষোভ শোনা যায় মীনাক্ষীর মুখে ৷ তিনি বলেন, আমাদের আক্ষেপ বা রাগ নেই ৷ রয়েছে আশংকা ৷ গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ রুটিরুজির কথা বলছে কি না, সেটাই আমাদের আশংকা ৷ তবে বামেরা তুড়ি মেরে সব বাধা পেরিয়ে যান ৷ ডিওয়াইএফআই নেত্রীর তোপ, কুত্তা মোটা হো জানে সে শের নেহি বনতা ৷ বামেরা বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বে না – ব্রিগেডের সমাবেশ থেকে এই বার্তাই দিয়েছেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্য়ায় ৷ তিনি বলেন, গোটা দেশকে উন্নততর ভবিষ্যতে নিয়ে যেতে হলে লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না ৷ শেষ দেখে ছাড়ব ৷