নতুন আধার বা আধার আপডেট নিয়ে গুচ্ছের বদল, বাতিল প্যান-ভোটার-রেশন কার্ড সহ বহু নথি 

মোদি সরকারের নয়া ফরমান। আর তাতে সাধারণ মানুষের জন্য দরজা খুলে গেল চরম হয়রানির। নতুন আধার বা আধার আপডেট করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বহু নথি স্রেফ বাতিল করে দিল মোদি সরকার। সবচেয়ে বড় কথা, জন্ম-তারিখের প্রমাণ হিসেবে বাদ দিয়ে দেওয়া হল ভোটার কার্ড, প্যান, রেশন কার্ডের মতো পরিচয়পত্র। বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই নিয়ম চালু করেছে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা ইউআইডিএআই। ব্যাঙ্ক-ডাকঘরে লেনদেনের জন্য এখন প্যান আবশ্যিক। আবার আধারের সঙ্গে প্যান লিঙ্ক না করালে বন্ধ হয়ে যাবে যাবতীয় পরিষেবা। অথচ, আধারের জন্যই এই পরিচয়পত্র আর বৈধ নয়! সঙ্গে এই তালিকায় জুড়েছে আরও একঝাঁক নথি। উদ্বেগের বিষয় হল, নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী বৈধ অধিকাংশ ডকুমেন্টই সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের থাকে না। আধার হয়তো তাঁদের হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আপডেট? নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১০ বছর অন্তর আধার আপডেট করতেই হবে। সেক্ষেত্রে কোন পরিচয়পত্র দেখিয়ে তাঁরা আধার আপডেট করবেন? ইতিমধ্যেই প্যান বা ভোটার নিয়ে যাঁরা আধার পরিষেবা কেন্দ্র বা ডাকঘরে আধার কার্ড করাতে, বা জন্ম তারিখ বদলাতে আসছেন, তাঁদের চরম হয়রানি হচ্ছে। ভোটার বা রেশন কার্ড নিয়ে লাইন দেওয়ার পর তাঁরা জানতে পারছেন, এইসব পরিচয়পত্র চলবে না। কেন এইসব গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়পত্র জন্ম তারিখের প্রমাণপত্র হিসেবে বাতিল করা হল, তার কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি আধার কর্তৃপক্ষ। এখানেই শেষ নয়। জন্ম তারিখের প্রমাণপত্র হিসেবে বাতিল করা হয়েছে স্কুল ছাড়ার সার্টিফিকেট, স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট, কেন্দ্রীয় সরকারি হেল্থ সার্ভিস স্কিমের শংসাপত্র, রেশন কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, কিষান ফটো পাসবুক, প্রতিবন্ধী শংসাপত্র, এসসি, এসটি বা ওবিসি সার্টিফিকেট, ম্যারেজ সার্টিফিকেট, ১০০ দিনের জব কার্ড, লেবার কার্ডও। তাহলে গৃহীত হবে কী? বলা হয়েছে, পাসপোর্ট, সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার আইডেন্টিটি কার্ড, পেনশনার কার্ড, স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মার্কশিট বা সার্টিফিকেট প্রভৃতি।   আসা যাক প্রুফ অব আইডেন্টিটি বা পরিচয়পত্রের প্রমাণ সংক্রান্ত নথিতে। এক্ষেত্রে আধার কর্তৃপক্ষ আগে ব্যাঙ্কের পাসবইকে নথি হিসেবে গ্রহণ করত। তা এখন আর গৃহীত হচ্ছে না। গ্রহণ করা হবে না ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্ট বা পোস্ট অফিস সেভিংস অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্টও। নেওয়া হবে না এমপি, এমএলএ, পঞ্চায়েত প্রধান বা পুরসভার কাউন্সিলারের শংসাপত্র। বাদ গিয়েছে বিদ্যুতের বিল, ফোনের বিল, সম্পত্তি করের চালান, গ্যাসের সংযোগের বিল, জীবন বা স্বাস্থ্যবিমা পলিসির নথিও। এক্ষেত্রে অবশ্য গৃহীত হচ্ছে প্যান, রেশন ও ভোটার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স।  এতদিন অ্যাড্রেস প্রুফ হিসেবে ড্রাইভিং লাইসেন্স মান্যতা পেয়ে এসেছিল। সেটাও এখন বাতিলের খাতায় চলে গিয়েছে। একইভাবে আগে যেখানে সরকারি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীদের আইডেন্টিটি কার্ড গ্রহণ করা হতো, সেটাও আর গ্রাহ্য হবে না। একই কথা প্রযোজ্য পেনশনার কার্ড, স্কুল ছাড়ার শংসাপত্রের ক্ষেত্রেও। তাহলে গৃহীত হবে কী? শুধু পাসপোর্ট, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, কিষান ফটো পাসবুক, ম্যারেজ সার্টিফিকেট, এসটি, এসটি, ওবিসি সার্টিফিকেট, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট। এরও ব্যাখ্যা কর্তৃপক্ষ দেয়নি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!