মধ্যমগ্রাম হত্যা কাণ্ডে করা হবে মা ও মেয়ের টি-আই প‍্যারেড

মধ‍্যমগ্রাম হত‍্যা-কাণ্ডে আজ ধৃত মা ও মেয়ের টি-আই প্যারেড করাবে পুলিশ। এই পদ্ধতির মাধ‍্যমে অভিযুক্ত আরতি ও ফাল্গুনীকে শনাক্তকরণ করবেন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা। ইতিমধ্যে পুলিশের করা টি-আই প‍্যারেডের আবেদন মঞ্জুর করেছে বারাসত আদালত। আবেদন মঞ্জুর হতেই সময় নষ্ট না করে শনিবার টি-আই প‍্যারেডের জন্য বেছে নেওয়া হল দিনটি। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন ট্রলি ব‍্যাগে দেহ ভরে নিয়ে যাওয়ার সময় মা ও মেয়ের এই ‘কীর্তি’র সাক্ষী যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়েই টি-আই প‍্যারেড করানো হবে। এর মধ্যে রয়েছেন সেদিনের দুই প্রত্যক্ষদর্শী ভ‍্যান চালক ও ট‍্যাক্সি চালক। পুলিশের দাবি, ধৃতদের চিহ্নিতকরণ করতেই মূলত টি-আই প‍্যারেড পদ্ধতি ব‍্যবহার করা হয়! এটি তদন্তের একটি অংশ। যে কোনও তদন্তের ক্ষেত্রে এটি অত‍্যন্ত প্রয়োজনীয় । এই বিষয়ে বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া বলেন, “শনিবার দমদম সেন্ট্রাল জেলে টি-আই প‍্যারেড হবে ধৃতদের। সেখানে অভিযুক্ত মা ও মেয়েকে শনাক্তকরণ করবেন ট্রলি-কাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শীরা। সেদিন দমদম সেন্ট্রাল জেলে হাজির থাকতে বলা হয়েছে তাঁদের।” এদিকে,মধ‍্যমগ্রামে পিসি শাশুড়ি খুনে ধৃত আরতি ও তাঁর মেয়ে ফাল্গুনীকে হেফাজতে না নেওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, যা ঘিরে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল মধ‍্যমগ্রাম থানাকে। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার ধৃত মা ও মেয়েকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চলেছে পুলিশ। এ নিয়ে আবেদনও জানানো হয়েছে বারাসত জেলা আদালতে। জেলার পুলিশ সুপার বলেন, “তদন্তের অগ্রগতিতে আরতি ও ফাল্গুনীকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন। তাই,পুনরায় আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। আশা করছি সোমবার হেফাজতে পেয়ে যাব ধৃত মা ও মেয়েকে। হেফাজতে নিয়ে ধৃত দু’জনকে জেরা করা হলে আরও কিছু নতুন তথ্য উঠে আসবে বলেই মনে করছি।” তবে, ট্রলি-কাণ্ডে আগে কেন আরতি ও তাঁর মেয়ে ফাল্গুনীকে হেফাজতে নেওয়া হল না? এই প্রসঙ্গে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া। অন‍্যদিকে,মধ‍্যমগ্রাম হত্যা-কাণ্ডে তদন্ত যত এগোচ্ছে,ততই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে।নিহত পিসি শাশুড়ি সুমিতা ঘোষের সম্পত্তি হাতানোর উদ্দেশ্যেই যে তাঁকে খুন করা হয়েছে, তা ধৃত আরতি ও ফাল্গুনীকে জেরা করে একপ্রকার নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। তারই মধ্যে রহস্য ঘনিভূত হয়েছে খুনে তৃতীয় ‘সন্দেহজনক’ ব‍্যক্তির উপস্থিতি ঘিরে। ঘটনার দিন যে ভ‍্যানে নীল রঙের ট্রলি ব‍্যাগে দেহ ভরে বীরেশ পল্লি থেকে দোলতলায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল,তার চালকের বয়ানেও উঠে এসেছে সাদা জামা পরা তৃতীয় ব‍্যক্তির কথা ৷ এই ‘তৃতীয় ব‍্যক্তি’ই নাকি ঘটনার দিন ওই ভ‍্যান চালককে ‘সুপারিশ’ করেছিলেন দুই মহিলাকে দোলতলায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য। তারপর থেকে কার্যত যেন ‘ভ‍্যানিশ’ হয়ে গিয়েছেন বছর পঁয়তাল্লিশের ওই রহস্যময় ‘ব‍্যক্তি’। তিনি কে? হঠাৎ করে কেনই বা তিনি ওই দুই মহিলাকে নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করলেন? তাহলে কী আগে থেকেই আরতি ও ফাল্গুনীর সঙ্গে পরিচয় ছিল ওই ব‍্যক্তির? এমনই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইছে মধ‍্যমগ্রাম থানার পুলিশ। ইতিমধ্যে ওই ভ‍্যান চালককে জেরাও করেছে তদন্তকারীরা। তিনি জানিয়েছেন,’এর আগে কখনও ওই ব‍্যক্তিকে এলাকায় তিনি দেখেননি। পরিচিতও নন তিনি। ওই ব‍্যক্তি তাঁকে প্যাসেঞ্জার নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করলেন।’ তাই, ওই রহস্যময় ব‍্যক্তির খোঁজ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বারাসত জেলা পুলিশ। ইতিমধ্যে ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখেছে তাঁরা।

error: Content is protected !!