
ওয়াকফ আইন নিয়ে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী
মুর্শিদাবাদের অশান্তি নিয়ে সতর্ক রাজ্য প্রশাসন । কলকাতা হাইকোর্টের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার পর এই নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের তৎপরতা শুরু । শনিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে ভিডিও বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব । বৈঠকে রাজ্যের ডিজিপি জানান, ধুলিয়ান-সহ আশপাশের এলাকায় পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চলছে কড়া নজরদারি। পাশাপাশি তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন বিএসএফের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে । বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, মুর্শিদাবাদে আগে থেকেই মোতায়েন ছিলেন প্রায় ৩০০ বিএসএফ জওয়ান ৷ যা গড়ে ধরে নেওয়া হয় ৩ কোম্পানির সমান । এই বাহিনীর সঙ্গে নতুন করে ৫ অতিরিক্ত কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে রাজ্য সরকারের অনুরোধে। অর্থাৎ, বর্তমানে মুর্শিদাবাদ এবং সংলগ্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোট ৮ কোম্পানি বা আনুমানিক ৮০০ জওয়ান মোতায়েন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার হাইকোর্টেও দাখিল হয় মামলা। রাজ্যের একাধিক জেলায় সাম্প্রতিক অশান্তির প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা আবেদনের ভিত্তিতে। মুর্শিদাবাদ, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতার কয়েকটি অংশে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আবেদন জানান তিনি। শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবীরা প্রথমে আপত্তি জানালেও হাইকোর্ট সাফ জানিয়ে দেয় – যেহেতু পুলিশ নিজে বিএসএফের সহায়তা নিচ্ছে, সেক্ষেত্রে আরও বাহিনী মোতায়েন করতে আপত্তির প্রশ্নই ওঠে না। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যের প্রশাসনিক ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করবে না বরং পুলিশকে সহায়তাই করবে। এরপরই রাজ্যের ডিজিপি রাজীব কুমার শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বহরমপুরে পৌঁছন। সেখানে জেলা পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি রাত আটটার মধ্যে জঙ্গিপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। প্রায় একই সময়ে বিএসএফ দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের দুই শীর্ষ আধিকারিকও জঙ্গিপুরের দিকে যান। রাত ন’টায় দু’পক্ষের বৈঠক হয় বলেই খবর। এই বৈঠক থেকেই নির্ধারণ হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায়, কীভাবে এবং কত সংখ্যায় মোতায়েন করা হবে, তার রূপরেক্ষা নির্ধারিত হয় ৷ প্রশাসনিক সূত্রে খবর, পরিস্থিতি যাতে আরও জটিল না-হয়, তার জন্য একযোগে কাজ করছে রাজ্য ও কেন্দ্র।