৯ সেকেন্ডেই ‘ওয়াটারফল টেকনিক’-এ গুঁড়িয়ে গেল নয়ডার টুইন টাওয়ার

আজ দুপুর ২টো ৩০ মিনিটে বিপুল বিস্ফোরণের অভিঘাতে গুঁড়িয়ে গেল নয়ডার টুইন টাওয়ার ৷ মুহূর্তে স্মৃতিতে পরিণত হল বিতর্কিত এই দুই অট্টালিকা ৷ প্রায় ১০০ মিটার উঁচু নয়ডার এই টুইন টাওয়ার ধ্বংস করতে প্রস্তুতি নেওয়া হয় গত কয়েকমাস ধরে ৷ জানা গিয়েছে, যেভাবে বিস্ফোরণের মাধ্যমে এই টুইন টাওয়ার নিমেষে ভেঙে ফেলা হল সেই প্রযুক্তিকে বলে হয় ‘ওয়াটারফল টেকনিক’৷ মুম্বইয়ের এডিফাইস ইঞ্জিনিয়ারিংকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এই দুই অট্টালিকা ভাঙার ৷ এই সংস্থাকে সহযোগিতা করে দক্ষিণ আফ্রিকার সংস্থা জেট ডেমোলিশনস ৷ প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয় এই দুই অট্টালিকা ভাঙতে ৷কুতুব মিনারের চেয়েও উঁচু নয়ডার টুইন টাওয়ারের মধ্যে অ্যাপেক্স ৩২ তলা বিশিষ্ট, আর সেয়ানের রয়েছে ২৯ তল ৷ এই দুই অট্টালিকাকে আইনি লড়াই শুরু হয় ২০১২ সালে ৷ অভিযোগ ওঠে, নিয়ম ভেঙে নির্ধারিত উচ্চতার থেকেও বেশি উচ্চতার এই দুই টাওয়ার তৈরি করা হয় ৷ অ্যাপেক্স ও সেয়ানে মোট ৯১৫টি ফ্ল্যাট ছিল ৷ ২০১৪ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই টুইন টাওয়ার ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেয় ৷ মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত ৷ গত বছর রায়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে শীর্ষ আদালত ৷ তিন মাসের মধ্যে এই টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয় ৷ কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণে সেই নির্দেশ কার্যকর করতে এতটা সময় লাগল ৷ এদিন টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলার আগে আগাম সতর্কতা হিসেবে বেশকিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল ৷ নিকটবর্তী নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়েতে দুপুর ২টো ১৫ মিনিট থেকে ২টো ৪৫ মিনিট পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখা হয় ৷ ড্রোন ওড়ানোর ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয় নয়ডা শহরে ৷ অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ধ্বংসকার্য চলার সময়ে আকাশপথে টুইন টাওয়ারের এক নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকায় কোনও বিমান চলাচল করবে না । ওই দুই অট্টালিকা সংলগ্ন প্রায় ৫ হাজার পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ উদ্ধার করা হয় এলাকার পথ কুকুরদেরও ৷ জানা গিয়েছে, এদিন বিস্ফোরণের পর আশপাশের বাড়িগুলির কোনও ক্ষতি হয়নি ৷ একটি জানলার কাঁচও ভাঙেনি ৷ সাড়ে 6টার পর আশপাশের এলাকার বাড়িগুলির বাসিন্দারা তাঁদের ঘরে ফিরতে পারবেন ৷

error: Content is protected !!