বিকানের থেকে ভার্চুয়ালি ১৮টি রাজ্যের ১০৩টি অমৃত ভারত স্টেশনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

বৃহস্পতিবার বিকানের থেকে ভার্চুয়ালি দেশের ১০৩টি অমৃত ভারত স্টেশনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ এর মধ্যে রয়েছে রাজ্যের ৩টি ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের অমৃত ভারত স্টেশন প্রকল্প ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই প্রকল্পে দেশের বিভিন্ন রেল স্টেশনকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সজ্জিত করা, যাতে যাত্রীদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আরও আরামদায়ক এবং নিরাপদ হয়। এদিন প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের যে তিনটি স্টেশন অমৃত ভারত স্টেশনের উদ্বোধন করেন, সেগুলি হল পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড়, নদিয়ার কল্যাণী ঘোষপাড়া এবং পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড় ৷ এদিন রাজস্থানের বিকানের থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যে দেশের শতাধিক অমৃত ভারত স্টেশনের উদ্বোধন করেন মোদি ৷ রাজ্যের এই তিনটি স্টেশেনের মধ্যে পানাগড় ও কল্যাণী ঘোষপাড়া হল পূর্ব রেলের অধীন ৷ আর জয়চণ্ডী পাহাড় স্টেশনি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের অধীনে ৷ এ নিয়ে রাজ্যের মোট ১০০টি স্টেশন অমৃত ভারতের অওতায় এল ৷ পর্ষটকদের কথা ভেবে পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড় স্টেশনটি অমৃত ভারত স্টেশনে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল ৷ কারণ জয়চণ্ডী পাহাড়, ওয়াটারফল এবং মন্দিরে প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক এখানে আসেন ৷ স্টেশনটিকে মধুবনী শিল্পকলায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে ৷ দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের মত পানাগড়ে রয়েছে বিভিন্ন শিল্পতালুক। এর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর ঘাঁটি, বিমান ঘাঁটি। প্রচুর মানুষের যাতায়াত এই পানাগড় রেল স্টেশন দিয়ে। রেলের এক আধিকারিক প্রবীণ কুমার প্রেম বলেন,”পানাগড়ে আরও কাজ হবে । এছাড়াও আসানসোল ডিভিশনের অন্ডাল, পান্ডবেশ্বর স্টেশনকেও আধুনিকতার মোড়কে মুড়ে ফেলা হবে।” এই প্রকল্পের আওতায় স্টেশনগুলিতে আধুনিক পরিকাঠামো, উন্নত যাত্রী সুবিধা, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এবং স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটানো হচ্ছে। পানাগড় শিল্পাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন পানাগড় ৷ যা পূর্ব রেলের অধীনে পশ্চিমবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলও৷ পানাগড় স্টেশনটি পশ্চিম বর্ধমান জেলায় অবস্থিত এবং এটি আশপাশের অঞ্চলের বাণিজ্য ও যাতায়াতের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় পানাগড় স্টেশনে আধুনিক টিকিট কাউন্টার, প্রতীক্ষাগার, পরিচ্ছন্ন শৌচাগার, এবং উন্নত প্ল্যাটফর্মের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও, যাত্রীদের সুবিধার জন্য ওয়াই-ফাই, ডিজিটাল তথ্য প্রদর্শনী বোর্ড এবং লিফট ও এসকেলেটরের মতো আধুনিক সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। স্টেশনের সৌন্দর্যায়নের জন্য স্থানীয় শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটছে, যা পানাগড়ের ঐতিহ্যকে তুলে ধরবে । অমৃত প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে অত্যাধুনিক স্টেশন হিসেবে অনন্য রূপ নিল নদীয়ার কল্যাণী ঘোষপাড়া রেল স্টেশনটিও ৷ শেষ হয়েছে আধুনিকরণের কাজ ৷ অত্যাধুনিক এই স্টেশনে থাকছে যাত্রী সাছন্দের জন্য GPS ঘড়ি । থাকছে যাত্রীদের জন্য উন্নতমানের প্রতীক্ষালয়, বিশেষভারে সক্ষমদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা ৷ এছাড়াও উন্নত মানের লাইব্রেরি, পরিশুদ্ধ ঠান্ডা পানীয় জলের ব্যবস্থা, এক স্টেশন এক দোকান স্টল-সহ নানাবিধ সুবিধা। বৃহস্পতিবার এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে সকাল থেকেই সাজিয়ে তোলা হয়েছিল স্টেশন চত্বর। পরবর্তীতে নদিয়ার নির্বাচিত অন্যান্য মডেল স্টেশন গুলির কাজ দ্রুত শেষ করার কথা জানানো হয়েছে রেলের তরফে। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার সহ অন্যান্যরা।