বিকাশ ভবনে বিক্ষোভ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন পুলিশের

চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় বিধাননগরে বিকাশ ভবন চত্বরে ৷ পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের উপর লাঠি চালিয়ে অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে ৷  এদিন এই নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার ও এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামীম ৷ সেখানে সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘প্রথম বেআইনি কাজটা আন্দোলনকারীরাই করেছিল ৷’’ চাকরিহারাদের তাণ্ডবে বিকাশ ভবনে আটকে পড়েন পাঁচশোরও বেশি সরকারি কর্মী। তাঁদের মধ্যে কেউ অন্তঃসত্ত্বা। আবার কেউ অসুস্থ। তাঁদের উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের উপর হামলা চালান আন্দোলনকারীরা। তা সত্ত্বেও ৭ ঘণ্টা ধরে সংযমের পরিচয় দিয়েছে পুলিশ। যেটুকু লাঠিচার্জ হয়েছে তা শুধুমাত্র বিকাশ ভবনে কর্মরত সরকারি কর্মীদের বের করতে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে লাঠিচার্জের ঘটনার ব্যাখ্যা দিলেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার। এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার বলেন, “চাকরিহারারা বিকাশ ভবনে ১০ দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলেন। গতকাল অবস্থান অন্যরকম চেহারা নেয়। দু-আড়াই হাজার লোক চলে আসেন। ব্যারিকেড ভাঙেন। পুলিশ অনুরোধ করলেও শোনেননি। পুলিশকে ধাক্কাধাক্কি করে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। কাউকে বেরতে দেবেন না বলেন। পুলিশ সচেতনভাবে কিছু করেনি। পূর্ণ সম্মান দেখিয়ে, ধৈর্য দেখিয়েছে পুলিশ। অ্য়াকশন নিলে গেট ভাঙার সময় করা যেত। ৭ ঘণ্টা ধরে পুলিশ বুঝিয়েছে। বিকাশ ভবনে ৫৫টি দপ্তর, ৫০০ থেকে ৬০০ কর্মী রয়েছেন। সন্ধের পর তাঁরা বেরতে চান। কিন্তু আন্দোলনকারীরা এককাট্টা বেরতে দেবেন না। পুলিশ তা সত্ত্বেও কিছু করেনি। বুঝিয়েছেন। মাইকিং করা হয়।” এসএসসি ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হওয়ার পর চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষককর্মী। মিরর ইমেজ প্রকাশ ও বেশ কিছু দাবিতে বৃহস্পতিবার ফের পথে নামেন তাঁরা। বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে বিক্ষোভে বসেন। বিকেলে জানিয়ে দেন বিকাশ ভবন ঘেরাও করবেন আন্দোলনকারী। সেখানে আটকে পড়েন প্রচুর সরকারি কর্মচারী। পুলিশ তাঁদের বার করার সময় বাধা দেন শিক্ষকরা। তখনই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। পুলিশকে বলপ্রয়োগ করতে দেখা যায়। এদিন রাজ্য পুলিশের এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “৭ ঘণ্টা ধরে পুলিশ বুঝিয়েছে। বিকাশ ভবনে ৫৫টি দপ্তর, ৫০০-৬০০ কর্মী রয়েছেন। একজন সন্তানসম্ভবা অসুস্থ বোধ করেছিলেন। কারও মা অসুস্থ। সন্ধের পর তাঁরা বেরতে চান। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাঁদের বেরতে বাধা দেন। তাঁদের বের করতে গেলে বাঁধার মুখে পড়ে নূন্যতম বলপ্রয়োগ করা হয়েছে। যা করা হয়েছে সমস্তটাই প্রোটেকল মেনে।” পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীদের যেমন বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার রয়েছে তেমন ভাবেই বিকাশ ভবনে আটকে পড়া চাকরিরতদের দিনের শেষে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অধিকার রয়েছে।  রাজ্য পুলিশের কর্তা সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনায় পুলিশের ১৯ জন কর্মী আহত হয়েছেন। যাঁরা এই কাজে প্ররোচনা বা উসকানি দিয়েছেন তাঁদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, “গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনও বাধা নেই।”

error: Content is protected !!