তিন বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা, উচ্চস্তরীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

সন্ত্রাসবাদকে সমুচিত শিক্ষা দেওয়াই এখন জাতীয় সংকল্প ৷ মঙ্গলবার লোক কল্যাণ মার্গের বাসভবনে উচ্চস্তরীয় বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সরকারি সূত্রে খবর, সেখানে তিনি এই কথা জানিয়েছেন ৷ এদিনের বৈঠকে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, চিফ ইফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান এবং সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, বায়ুসেনা প্রধান অমরপ্রীত সিং ও নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী ৷ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্ট জানিয়েছেন পাকিস্তানকে কখন, কীভাবে জবাব দেওয়া হবে । সেই বিষয়টি তিনি দেশের তিন বাহিনীর উপর ছেড়ে দিচ্ছেন ৷ তিনি বলেন, “আমাদের বাহিনীর সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে ৷ তারা সিদ্ধান্ত নেবে, ভারত কাকে নিশানা করবে, মোড কী হবে এবং কখন করবে ৷” তিনি নিশ্চিত করেছেন, “সন্ত্রাসবাদকে ধ্বংস করে দেওয়াই এখন আমাদের জাতীয় সংকল্প৷” এদিনের বৈঠকের আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিব গোবিন্দ মোহন তিনটি আধাসামরিক বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে উচ্চস্তরীয় বৈঠক করেন ৷ এছাড়া অন্য দুই নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন ৷ সেখানে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা অবশ্য স্পষ্ট জানা যায়নি ৷

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হানাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক ফের তলানিতে ঠেকেছে ৷ এই হামলায় ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ তাঁদের বেশিরভাগ পর্যটক ৷ একজন নেপালের পর্যটকও ছিলেন ৷ এরপর জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী ৷ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে লস্কর-ই-তইবা জঙ্গি সংগঠনের মদতপুষ্ট দ্য রেজিস্ট্যান্ট ফোর্স (টিআরএফ) ৷ এর পরদিন ২৩ এপ্রিল মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির উচ্চস্তরীয় বৈঠকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৫টি কড়া পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ৷ এই হামলার প্রায় 48 ঘণ্টা পরে বিহারের মধুবনিতে একটি সভা থেকে তিনি বলেন, “বিহারের মাটি থেকে আমি সারা দুনিয়াকে বলতে চাই, ভারত প্রতিটি জঙ্গিকে চিহ্নিত করবে এবং শাস্তি দেবে ৷ তাদের চক্রীরাও ছাড় পাবে না ৷ ভারতের মনোবল ভাঙা যাবে না ৷ সন্ত্রাসবাদীদের কোনওভাবেই রেয়াত করা হবে না ৷” এদিকে এই হামলার ঘটনার পর থেকে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে লাইন অফ কন্ট্রোল (এলওসি)-তে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গুলি চালাতে শুরু করেছে পাক সেনা ৷ টানা পাঁচ দিন ধরে সীমান্তে গুলি চালাচ্ছে তারা ৷ ভারতের পাঁচটি পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও তাদের আকাশপথ ভারতের জন্য বন্ধ করেছে ৷ এছাড়া বন্ধ হয়েছে ভারত-পাক আটারি-ওয়াঘা আন্তর্জাতিক সীমান্ত ৷ ভারতের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিতের পাল্টা জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “জল বন্ধ হলে তাকে যুদ্ধ বলেই গণ্য করা হবে ৷”

error: Content is protected !!